ফেনী-মাইজদী সড়কের মহিপালে ময়লার ভাগাড়
শাহজালাল ভূঁঞা, ফেনী : ফেনীর মহিপাল নোয়াখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকার জিরোপয়েন্ট থেকে আনসার ক্যাম্প পর্যন্ত মূল সড়কটি (ফেনী-মাইজদী সড়ক) ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সড়কের অনেকটা অংশজুড়ে ফল ব্যবসায়ীদের পঁচা ফলসহ বিভিন্ন আবর্জনা স্তুপ করে রাখেন। অন্যদিকে পাবলিক টয়লেটের দুর্গন্ধযুক্ত পানি ও ময়লা-আবর্জনা। এসব আর্বজনা দীর্ঘদিন সড়কে পড়ে থাকায় উৎকট দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। এতে করে জনবহুল ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও পথচারীসহ আশপাশের লোকজনের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহিপাল নোয়াখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফেনী-মাইজদী সড়কটির পাশে রয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কার্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কার্যালয়, ট্রমা সেন্টার, যক্ষ্মা নিরাময় কেন্দ্র, আনসার ক্যাম্প এবং সড়কের আরেক পাশে রয়েছে ম্যাজিষ্ট্রেট কলোনীসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর ও স্থাপনা। এছাড়াও প্রতিনিয়ত বৃহত্তর নোয়াখালী, লক্ষীপুর ফেনীর দাগনভূঞা ছাড়াও ভোলা, বরগুনাসহ দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার বিভিন্ন শ্রেণীর লোকজন যাতায়াত করে থাকেন। ফেনীর পশ্চিমাঞ্চল কমিউনিটির সভাপতি ফেনী চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক আলহাজ্ব আবুল কাশেম বলেন, ফেনী দেশের একটি অগ্রসর জনপদ। এখানকার মানুষের আর্থিক স্বচ্ছলতা, আধুনিক জীবনযাপন, রুচিবোধের প্রশংসা সারাদেশের মানুষের মুখে মুখে। অথচ ফেনীর মহিপালে নোয়াখালী বাসস্ট্যান্ড ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় দেখলে মনে হয় না ফেনী একটি পরিচ্ছন্ন সৌন্দর্য্য নগরী। এ পথ দিয়ে যাতায়াতকারী অন্যান্য জেলার মানুষজনকে এ নিয়ে নানা বিরূপ মন্তব্য করতে শোনা যায়। তিনি বলেন, পাবলিক টয়লেটটি সড়কের পাশ থেকে সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। ময়লা-আবর্জনা এভাবে রাস্তায় না ফেলা ও পানি নিস্কাশনে পৌর কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন।
রতনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শামীম বলেন, সড়কের ওপর ময়লার ভাগাড় ও টয়লেটের দুর্গন্ধযুক্ত পানি জমে থাকার ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ চলাচলকারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে ফেনী শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা খোলা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। পঁচাগন্ধে মানুষের চলাফেরা দায় হয়ে উঠেছে। আবর্জনার দুর্গন্ধের কারণে ওইসব পথ দিয়ে হাঁটাচলা করা যায় না বলে জানান এলাকাবাসী। সড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনার কারণে পুরো এলাকায় যানজটের পাশাপাশি সৃষ্টি হচ্ছে এক অস্বস্তিকর পরিবেশের। ফেনী পৌরসভার পরিচ্ছন্ন বিভাগ সূত্র জানায়, ফেনী শহরে প্রতিদিন প্রায় ৮০ টন ময়লা-আবর্জনা জমে। এরমধ্যে ফেনী পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা সর্বোচ্চ ৪০ টন ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করে। আর অর্ধেক বাকি ৪০ টন ময়লা-আবর্জনার কারণে বেসামাল থাকেন পৌরবাসী।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে, ডাক্তার পাড়া, মাস্টার পাড়া, সহদেবপুর, রামপুর, পশু হাসপাতালের সামনে, রেলওয়ে ষ্টেশন এলাকা, বিরিঞ্চি এলাকার কামাল হাজারী রোড, নাজির রোড, সদর হাসপাতালের সামনে, সুলতানপুর স্কুল রোড, শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক ও মহিপালসহ অসংখ্য এলাকায় সড়কের পাশেই ফুটপাথ ও সড়কজুড়ে ময়লার ছড়াছড়ি। যে যার মতো ফুটপাত ও সড়কে ময়লা ফেলে যাচ্ছে।
ফেনী পৌরসভার স্যানেটারী পরিদর্শক কৃষ্ণময় বনিক বলেন, ফেনী পৌরসভায় পরিচ্ছন্ন কর্মীরা দুই শিফটে কাজ করে। প্রথম শিফটের কর্মীরা ভ্যানে করে পাড়া-মহল্লা থেকে ময়লা এনে রাস্তায় ফেলে। পরে বিকেলে দ্বিতীয় শিফটের কর্মীরা রাস্তা থেকে ময়লা সরিয়ে নেন।
ফেনী পৌরসভার স্যানেটারী কনজারভেন্সি পরিদর্শক শাহজাহান জানান, ফেনী পৌর এলাকায় যে পরিমাণ ময়লা-আবর্জনা জমে তা সরানোর জন্য পরিচ্ছন্নকর্মী অপ্রতুল। সমস্যা-সমাধানে লোকবল বাড়ানো প্রয়োজন।
ফেনী পৌরসভার কাউন্সিলর গোলাম মেহেদী আলম চৌধুরী রুবেল পথচারীদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, পাবলিক টয়লেটটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা অগ্রগতির জন্য শীঘ্রই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।