শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক বিষয়ে ফেল সত্ত্বেও অটো পাস করালে মামলা দুর্নীতির টাকাই জঙ্গিবাদে ব্যবহার হয় : দুদক চেয়ারম্যান
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : আমাদের আইনের কোনো দুর্বলতা নেই। ক্ষমতার কমতি নেই। রাজনৈতিক কোনো চাপও নেই। দুর্নীতির টাকাই জঙ্গিবাদে ব্যবহৃত হয়। সব দুর্নীতির টাকা সরকারি ব্যাংকে থাকে কেবল বিষয়টি এমন নয়, বেসরকারি ব্যাংকেও জনগণের টাকা থাকে। তাই দুদক বেসরকারি ব্যাংকের দুর্নীতিরও তদন্ত শুরু করছে। এ কথা বলেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
তিনি বলেন, শিক্ষার মান কমে গেছে। মান কমার পিছনে ফেল কালচার দায়ী। সবাই জিপিএ-৫ এর দিকে ঝুঁকছে। তাই যে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এক বিষয়ে ফেল করার পরও ছাত্রছাত্রীদের অটো পাস করিয়ে দেয়, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধের পাশাপাশি এই খাতে যে অর্থায়ন হচ্ছে তাও রোধ করতে হবে। সেটা করতে হলে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। এই জন্য সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। গণমাধ্যমকেও এই ব্যাপারে আরও ভূমিকা রাখতে হবে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যালয়ে দুদকের কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রধানদের সঙ্গে রোববার বৈঠক করেন তিনি। সেখানে তিনি সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে দুদকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রধানরা বক্তব্য রাখেন।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ব্যাংক থেকে লক্ষ কোটি টাকা চলে যাচ্ছে। আমরা দুর্নীতি বন্ধ করতে চাই। আমরাতো কাজ করছি। এই টাকা চলে যাওয়ার জন্য ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদেরও দায় আছে। আমরা এখন সব সরকারি ব্যাংকে যাচ্ছি। বোর্ডের লোকজনকেও ডাকছি। তাদের সঙ্গে কথা বলছি। বিষয়গুলো আমরা চিহ্নিত করে সমাধান করার চেষ্টা করছি।
দুদক চেয়ারম্যান জানান, এখন ব্যাংকিং খাতের দুর্নীতি বন্ধ করতে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি ব্যাংকেও জনগণের টাকা থাকে। তাই দুদক বেসরকারি ব্যাংকের দুর্নীতিরও তদন্ত শুরু করছে। প্রাইভেট ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অব্যবস্থাপনা দূর করা হবে। ব্যাংকিং খাতের দুর্নীতিকে কোনোভাবে ছাড় দেওয়া হবে না।
দুদকের চেয়ারম্যান অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকাকে দুর্নীতির গহ্বর আখ্যা দেন। বলেন, এর সঙ্গে ফ্ল্যাট মালিক, জমির মালিক, রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) সবাই জড়িত। এ বিষয়ে আমরা সরকারকে সুপারিশ করব।
দুদকের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ব্যাংকিং খাত ও আর্থিক খাত ছাড়াও দুদক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে গুরুত্ব¡ দিচ্ছে। সরকারের বেতন নিয়ে গ্রামে কাজ না করলে সেটাও দুর্নীতি। কর্মস্থলে চিকিৎসকরা না থাকলে সেটিও দুর্নীতি। এটি ক্ষমতার অপব্যবহার। দুর্নীতি সমাজ ও রাষ্ট্রকে কুরে কুরে খাচ্ছে। সবাই মিলে তা বন্ধ করতে হবে। সামাজিক আন্দোলন ছাড়া তা সম্ভব না। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম