যুদ্ধক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের উপর হামলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা : আফগান সরকার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানে কাবুলে আইএস জঙ্গিদের আত্মঘাতী বোমা হামলার দুই দিন পেরিয়ে গেলেও ঘটনার আকস্মিকতা থেকে এখনও বেরিয়ে আসতে পারেননি সেখানকার মানুষ। আইএস, হামলার দায় স্বীকার করলেও জন-নিরাপত্তায় সরকারের ব্যর্থতাকে দুষছেন অনেকে। সরকারের দাবি, যুদ্ধক্ষেত্রে জঙ্গিরা পিছিয়ে পড়ার কারণেই তারা সাধারণ মানুষকে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। এ অবস্থায় দেশটির আইএস অধ্যূষিত এলাকায় সেনা অভিযান জোরদারের পাশাপাশি হামলায় জড়িতদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার প্রতিশ্র“তি দেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। সময়টিভি
কাবুলের একটি গোরস্তানে লাশের মিছিল দেখে শোকস্তব্ধ হাজারা সম্প্রদায়ের কান্না যেন বাধ মানতে চাইছে না। শনিবারের ভয়াবহ হামলায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় রোববারও শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দেয় হাজারো আফগান। এ সময় গোরস্তানের প্রবেশপথে প্রত্যেককে তল্লাশি করার দায়িত্ব নেয় স্থানীয়রাই। সরকারের প্রতি আস্থাহীনতার কারণে জানমাল রক্ষায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না এসব মানুষ। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একজন নারী বলেন, কারা এ কাজ করছে? কেন করছে? এর কোন উত্তর নেই। তাই আমরা নিজেরাই নিজেদের হেফাজতের দায়িত্ব নিয়েছি।
আফগান সরকার নিরাপত্তার কথা ভেবে, সামনের ১০ দিন জন-সমাগম থেকে স্থানীয়দের বিরত থাকার নির্দেশ দিলেও তার পরোয়া না করে হামলার প্রতিবাদে রাজপথে বিক্ষোভে নামে হাজারো সরকার বিরোধী। জাতীয় পতাকার ওপর নিহতদের রক্তমাখা কাপড় বিছিয়ে অস্থায়ি স্মৃতিলিপি তৈরি করে তারা। দেশে অরাজকতার পেছনে তারা সরকারের বৈষম্যমূলক আচরণকে দায়ী করলেও সরকারের দাবি, যুদ্ধক্ষেত্রে জঙ্গিরা পিছিয়ে পড়ার কারণেই তারা সাধারণ মানুষকে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস হামলার দায় স্বীকার করলেও জন নিরাপত্তায় সরকারের গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
তারা বলেন, আইএস দায় স্বীকার আমার কাছে গুজব মনে হয়। সরকার জঙ্গিদের ওপর দায় চাপিয়ে নিজেদের দোষ ঢাকতে চাইছে।সরকার আমাদের কথা শুনছে না বলেই উগ্রবাদীরা একের পর হামলা চালাচ্ছে। তবে কোন কিছুই আমাদের আন্দোলনকে দমাতে পারবে না।
গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী দেশটির জঙ্গি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে অভিযান জোরদার করায় জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে তদন্ত পরিচালনার পাশাপাশি জঙ্গি বিরোধী অভিযান আরো কঠোর করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধায় হামলাস্থল দেহমাজাং স্কয়ারের নাম পরিবর্তণ করে মারটায়ার স্কয়ার বা শহীদ চত্বর নাম দিয়েছে কতৃর্পক্ষ।