তথ্য না জানানোর অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডিসিদের
আনিসুর রহমান তপন : নিরাপত্তাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আগাম গোয়েন্দা তথ্য জানান না বলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক সম্মেলনে যোগ দেওয়া জেলা প্রশাসকরা। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মুক্ত আলোচনা পর্বে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ অভিযোগ জানান তারা।
এসময় ডিসিরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ রাখার সুপারিশ করেন। তারা আরও জানান, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আরও বেশি সম্পৃক্ততা চান তারা। শুধু প্রশাসন নয়, সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলে জঙ্গিবাদের মূলোৎপাটন সম্ভব।
ডিসিরা বলেন, জঙ্গিবাদবিরোধী কমিটি ও সাধারণ মানুষ প্রশাসনের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করলে এ সমস্যা সমাধান সহজ হবে। আর গঠিত কমিটিগুলোকে আরও বেশি গতিশীল করা হয়েছে এ তথ্যটিও প্রধানমন্ত্রীকে জানান তারা।
মুক্ত আলোচনায় চারজন বিভাগীয় কমিশনার ও ২০ জেলা প্রশাসক অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশাসনের মাঠপর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ এসব কর্মকর্তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষদের নিয়ে সম্মিলিতভাবে জঙ্গিবাদ মোকাবিলার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে দেশটা সবার। সবাই মিলেই দেশকে ভালোবাসতে হবে, দেশের জন্য কাজ করতে হবে। এসময় তিনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নপর্যায়ে যে কমিটিগুলো হচ্ছে তা কার্যকরের নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ডিসিদের বলেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে সমাজের সব স্তরের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখতে হবে। এখনও সমাজের যে অংশের সঙ্গে কর্মকর্তা বা প্রশাসনের যোগাযোগ সম্ভব হয়নি, তাদের সঙ্গেও জঙ্গিবাদের কুফল নিয়ে আলোচনার নির্দেশ দেন। ডিসিদের তিনি বলেন, শিক্ষক, সমাজের শীর্ষ ব্যক্তিত্বসহ অন্যান্য কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। তবে সন্তানদের সঙ্গে অভিভাবকদের যোগাযোগটা যাতে আরও নিবিড় হয় সে বিষয়ের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা, তাদের সমস্যাগুলো অনুধাবন করা, সন্তানরা কেমন বন্ধুর সঙ্গে মিশছে, কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এ বিষয়গুলো যেন অভিভাবকরা নজর দেন সে বিষয়ে অভিভাবকদের আরও বেশি সচেতন করতে বিভিন্ন আলোচনা অনুষ্ঠান, সামাজিক অনুষ্ঠানে জঙ্গিবাদের কুফল নিয়ে আলোচনা করার নির্দেশ দেন তিনি।
প্রশাসনিক ও দাফতরিক বিভিন্ন দাবিদাওয়ার বাইরে এবার ডিসি সম্মেলনে জঙ্গিসংশ্লিষ্ট বিষয়টি আলোচনাই প্রধান্য পায়। মুখ্য হয়ে ওঠে জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় কৌশল নির্ধারণে। একই সঙ্গে ডিসিদের কর্মপরিধি ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়টিও স্থান পায় মুক্ত আলোচনায়। বৈঠক সূত্রে জানাগেছে এ তথ্য।
মুক্ত আলোচনার পর পর্যায়ক্রমে স্বরাষ্ট্র, অর্থ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী ও সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন ডিসিরা। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি