ইমরুল শাহেদ : জাপানের রাজধানী টোকিওর ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একটি প্রতিবন্ধী হোমে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে অন্তত ১৯ জন নিহত ও ৪৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা আশংকাজনক। জাপানের এনটিভি জানিয়েছে, সোমবার টোকিওর পশ্চিমে সাগামিহারা এলাকার ওই প্রতিবন্ধী বাড়িতে ঢুকে এক ব্যক্তি ছুরি নিয়ে এলোপাতাড়িভাবে লোকজনকে আঘাত করতে থাকে। হামলাকারীর নাম সাতোশি উয়েমাৎশু (২৬)।
জাপান টাইমস জানিয়েছে, হত্যাকা-ের পর দৃর্বৃত্ত নিজেই রাত তিনটার দিকে সুকুই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি পুলিশকে বলেন, ‘আই ডিড ইট।’ পুলিশ সাতোশির বরাত দিয়ে বলেছে, ‘প্রতিবন্ধীদের নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়াই ভালো।’
হামলাকারী কারণ হিসাবে জানিয়েছে, সে প্রতিবন্ধী হোমের একজন কর্মচারি। প্রতিবন্ধী হোম থেকে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং ঘটনাটি সে মেনে নিতে পারেনি।
প্রতিবন্ধী হোমের এক ডাক্তার জানিয়েছেন, আহতদের বেশিরভাগেরই ঘাড়ে ছুরির আঘাত করা হয়েছে এবং আহতরা মানসিকভাবে এতটাই বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে যে, তারা এখন কথা বলতে পারছেন না। হামলার সময় প্রতিবন্ধী হোমের আট কর্মী উপস্থিত ছিলেন এবং সেখানে ১৪৯ জন স্থায়ী বাসিন্দা রয়েছেন।
আত্মসমর্পণের সময় তার একটি ব্যাগ ছিল। সে ব্যাগে ছিল অনেকগুলো চাকু। জাপান টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ প্রাথমিকভাবে তাকে সন্দেহভাজন হত্যাকারী এবং হোমে অবৈধ প্রবেশকারী হিসাবে গ্রেফতার করেছে। ইতোমধ্যে পুলিশ তদন্ত কাজ শুরু করেছে। এই হোমটি পরিচালিত হয় কানাগাওয়া পারফেক্টুয়াল সরকারের অধীনে।
জাপানে এ ধরনের হামলার ঘটনা খুবই বিরল। গত কয়েক দশকের মধ্যে এই হামলাটিই সবচেয়ে ভয়াবহ। নিরীহ ও নির্দোষ মানুষের হত্যাকারী সাতোশি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাকে দুই সপ্তাহের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করাও হয়েছিল। ফেব্রুয়ারিতে চাকুরিচ্যুৎ করা হলে প্রতিবন্ধীদের হত্যার হুমকি দিয়ে একটি চিঠিও পাঠায় সে।
জাপানে অস্ত্র আইন কঠোর হওয়ায় এ ধরনের হামলার ঘটনা বিরল। ২০০৮ সালে টোকিওর আকিহাবারায় এক দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ৭ জন নিহত হন। এর আগে ২০০১ সালে একটি স্কুলে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির ছুরিকাঘাতে ৮ শিশু নিহত হয়। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম