কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি
এস.এম. সাগর, কুড়িগ্রাম : টানা ১০ দিন ধরে কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ১০৬ সেন্টিমিটর ও চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৮৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানিও।
বন্যার পানিতে ডুবে এ পর্যন্ত কুড়িগ্রাম সদর ও নাগেশ্বরী উপজেলায় ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। উলিপুর উপজেলার বজরা-চিলমারী সড়কে ভাঙন দেখা দেওয়ায় সড়ক জনপদ বিভাগ ও ইউনিয়ন পরিষদ ভাঙনরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার ৯ উপজেলার ৬০ ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে। নিচু এলাকার লোকজন ঘর-বাড়ি ছেড়ে উঁচু সড়ক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিলেও তা তলিয়ে যাওয়ায় আরও দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসীদের। বেশিরভাগ পরিবার এখনো গবাদি পশু নিয়ে ঘর-বাড়িতে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্য সংকটে আছে এসব এলাকার মানুষ। তলিয়ে গেছে ৫শ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়ক। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ২ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও তা সব এলাকায় এখনো পৌঁছায়নি । জনপ্রতিনিধিরা বলছেন এ সামান্য পরিমাণ ত্রাণ নিয়ে বন্যা এলাকায় যাওয়া সম্ভব না । খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে অনেক পরিবার।
উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ রেজাউল করিম আমিন জানান, আমার ইউনিয়নের ৭ হাজার অভাবি মানুষ আজ ৮দিন ধরে পানিবন্দি। এদের জন্য দুই দফায় ৯টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা ১০ কেজি করে ৯শ মানুষকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এখন দুর্গত এলাকায় বন্যার্ত মানুষের কাছে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি ৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে তিস্তা, দুধকুমারসহ অন্যান্য নদীর পানি।