া মুফতি এনায়েতুল্লাহ
হজরত রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘অসুস্থ হওয়ার আগে স্বাস্থ্যের প্রতি যতœবান হও।’ চিকিৎসকদের মতে, ‘রোগ আরোগ্যের তুলনায় রোগ প্রতিরোধই উত্তম।’ এইডস তেমনি একটি রোগ; যা প্রতিরোধের কোনো বিকল্প নেই। মরণব্যাধি এইডস সম্পর্কে সবাই কম-বেশি অবগত। বিশ্বে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে মহামারীর ন্যায়। এইডস আক্রান্ত ব্যক্তি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবেন এমন কোনো চিকিৎসা এখনো আবিষ্কৃৃত হয়নি। মৃত্যুই এইডসের অনিবার্য পরিণতি। চিকিৎসকরা এ রোগের প্রতিরোধে বেশকিছু পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
যেসব কারণে এই রোগের ভাইরাস ছড়ায়, এর প্রায় সবই ইসলাম ধর্ম শুরু থেকেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ইসলাম নর-নারীর মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের বাইরে কোনো দৈহিক মিলন অনুমোদন করে না। অবাধ যৌনাচার থেকে দূরে থাকাই এইডস থেকে মুক্তির সর্বোত্তম পথ। ব্যভিচার অনেক সামাজিক অনাচার ও বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য দায়ী। তাই ব্যভিচার বন্ধ করে বিবাহিত জীবনযাপনের জন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে কোরানে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। কেননা তা অত্যন্ত অশ্লীল ও মন্দ পথ।’ সুরা বনি ইসরাইল : ৩২
ইসলামে মাদকদ্রব্য সেবন-গ্রহণ হারাম ও নিষিদ্ধ। চিকিৎসকদের মতে এইডস ছড়ানোর অন্যতম কারণ হলোÑসিরিঞ্জ ভাগাভাগি করে মাদকদ্রব্য ব্যবহার করা। আল্লাহ মাদকদ্রব্যের ক্ষতিকর প্রভাবের কথা উল্লেখ করে সব ধরনের মদ ও নেশাজাত বস্তুর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছেন। এ প্রসঙ্গে হাদিসে আছে, ‘সব নেশাজাত দ্রব্যই মাদক এবং সব নেশাজাত দ্রব্যই হারাম।’মুসলিম
এইডস প্রতিরোধে ইসলামি অনুশাসন মেনে চলা কার্যকর একটি পদ্ধতি। ইসলামি অনুশাসন মানুষকে শুধু অসততা থেকেই রক্ষা করে তা নয়, বরং যাবতীয় খারাপ কাজ থেকেও বিরত রাখে। এজন্য সবার উচিত শিশুকাল থেকে প্রতিটি ছেলেমেয়েকে ইসলামি মূল্যবোধের আলোকে গড়ে তোলা। যেহেতু এই রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ছাড়া কার্যকর কোনো চিকিৎসা নেই। তাই এইডস প্রতিরোধে নৈতিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় অনুশাসন অনুশীলন ও ব্যাপকভাবে গণসচেতনতা সৃষ্টি করে এই মরণব্যাধি প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলনের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। ইসলামের অনুশাসনকে সমাজের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। এ ব্যাপারে চিকিৎসক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সমাজপতিসহ মসজিদের ইমাম, খতিব, আলেম-উলামা ও পীর-মাশায়েখদের ভূমিকা ও দায়িত্ব অনস্বীকার্য। লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট