মুহাম্মদ ইসমাইল জাবীহুল্লাহ
ইসলামে পরিবার ব্যবস্থা মানবসমাজে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক স্থাপনা যা আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তবে, ইসলামি পারিবারিক ব্যবস্থা স্বামী-স্ত্রী, শিশু ও নিকটজনদের অধিকারকে পারস্পরিক ভারসাম্য বজায় রেখে অত্যন্ত চমৎকার ও যথাযথভাবে নিশ্চিত করছে। চমৎকার পারিবারিক বন্ধন ভালোবাসা ও মহানুভবতার সৃষ্টি করে।
যা শান্তি ও নিরাপত্তার মাধ্যমে পারিবারে ভারসাম্য বজায় রাখে। এ ব্যবস্থাকে পরিবারের সদস্যদের আত্মিক সমৃদ্ধির উপাদান বলে গণ্য করা হয়। সমাজে চমৎকার শৃঙ্খলার সাথে যৌথপরিবার পরিচালিত হয় এবং শিশুরা সেবাযতেœর সাথে বেড়ে ওঠে।
মুসলিম বিশ্বে ‘বৃদ্ধাশ্রম’ খুঁজে পাওয়া দুর্লভ ব্যাপার। কারণ, ইসলামে পিতামাতার সাথে চমৎকার সম্পর্ক রাখার প্রতি অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। তাদের জীবনের কঠিন সময়ে এটাকে সম্মান ও বরকত লাভে ধন্য হওয়ার সুযোগ হিসেবে গণ্য করা হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে আমরা আমাদের পিতামাতার জন্য শুধু দোয়া করব এতেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না।
বরং, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে দয়া-মায়া ও সহৃদয়তার বন্ধনে আবদ্ধ থেকে তাদের সাথে সদাচরণ করে যাওয়া; আমাদের শিশুকালে যখন আমাদের কোনো শক্তি ছিল না, কিছুই করার ক্ষমতা ছিল না, তখন তারা নিজেদের জীবনকে তুচ্ছ করে আমাদের কল্যাণকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তাদের এ অস্বাধারণ ভূমিকা ও ত্যাগ-তিতীক্ষার কথা স্মরণ রাখা উচিত। এ জন্যই আমরা মায়ের মর্যাদাকে উচ্চাসনে আসীন দেখতে পাই। কারো পিতামাতা যখন বার্ধক্যে উপনীত হয় তখন তাদের সাথে উদারতা, সহানুভূতি ও নিজের সুখ দুঃখকে বাজি রেখে তাদের সুখ স্বাচ্ছন্দকে প্রাধান্য দেয়া উচিত।
ইসলামে আল্লাহ তায়ালার ইবাদাতের পরেই পিতামাতার সাথে সদাচরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পিতামাতার কঠিন সময় বার্ধক্য বয়সে তারা অসন্তুষ্ট হন এমন যে কোনো কথাবার্তা বলা মুসলমানদের উচিত নয়। কারণ, যখন তারা অকর্মন্য হয়ে পড়েন তখন তাদের কোনো গোনাহ থাকে না।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, অর্থাৎ, তোমার প্রতিপালক নির্দেশ দিচ্ছেন, তিনি ব্যতীত অন্য কারও উপাসনা করো না এবং পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। তাদের একজন বা উভয়ই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদের ‘উহ’ শব্দটিও বলো না, তাদের ধমক দিও না এবং তাদের সাথে শিষ্টাচারমূলক কথা বল। তাদের সামনে ভালোবাসার সাথে, ন¤্রভাবে মাথা অবনমিত হও এবং বল হে আমার পালনকর্তা, তাদের উভয়ের প্রতি অনুগ্রহ কর, যেমনি তারা আমাকে শৈশবে লালনপালন করেছেন। সুরা বনি ইসরাইল:২৩-২৪