লোকবলসংকট নিয়ে ২০ বছর ধরে চলছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
সাহাবুদ্দিন সনু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থ উপার্জনকারী ‘বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)’ বৃষ্টি পানি প্রকল্পসহ ১২টি প্রকল্পের কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
লোকবলের সংকট মোবাবেলা সম্ভব হচ্ছে না সংসদে আইন পাশ না থাকার কারণে। গত ২০১১ সাল থেকে অদ্যাবধি যেমন কোন নিয়োগ হয়নি তেমনি পদোন্নতিও হয়নি। ফলে প্রকল্পের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
২০১২ সালে প্রকল্পধীন উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় ১৫৬৩ জন লোকবলের প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠালেও তা পূরণ করা হয়নি। উল্লেখিত ঐ আইন না থাকার কারণে। ৫২৫ জন লোকবল সংকট নিয়ে মাত্র ৯৩৭ জন লোকবল নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে প্রকল্পের কাজ চালাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, ১৯৯২ সালে তৎকালীন সরকারের অধ্যাদেশের বলেই এখন পর্যন্ত কাজ চলছে। অর্থাৎ দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ অধ্যাদেশের উপরই নির্ভরশীল রয়েছে প্রকল্পটি। এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার তদবির করা হলেও এ সংক্রান্ত আইন পাশ করা হয়নি। অথচ একমাত্র অর্থ উপার্জনকারী প্রকল্প হিসেবে এটি চিহ্নিত। শুধু তাই নয় প্রকল্পটি দেশের খাদ্য উৎপাদনে একটি বড় ভূমিকা রাখে। যা বহু পুরানো ও বৃহৎ সংগঠন হিসেবে বিএডিসি অদ্যাবধি সে ভূমিকা রাখতে পারেনি। গত প্রায় ১০ বছর যাবৎ প্রকল্প পরিচালনার জন্য যে ব্যয় হয়, তার খরচ সরকারের নিকট থেকে নিতে হয়নি। কৃষকদের নিকট থেকে নেয়া সেচচার্জ থেকেই চলে। সরকার বরাদ্দ দেয় শুধুমাত্র প্রকল্পের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন-অর রশিদ জানান, প্রয়োজনের তুলনায় লোকবল কম থাকায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি নজর দেয়া প্রয়োজন। উল্লেখ্য, সেচচার্জ, আমফল বিক্রি ও বনায়নের গাছ বিক্রি করে প্রকল্পের বাৎসরিক আয় হয় প্রায় ১৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫৮% বিদ্যুৎ খরচ, ১০% অপারেটরদের বেতন, ১০% মেইনটেনেন্স খরচ ও বাকিটা কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতনসহ অন্যান্য ব্যয় হয়।
এদিকে বর্তমান সরকার সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রায় দ্বিগুন করার ফলে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ তার কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিতে হিমসিম খাচ্ছে। আগামীতে সেটা অসম্ভব হয়ে পড়বে। পূর্বে বেতন ভাতা দিতে হতো প্রায় ৩২ কোটি টাকা। বর্তমানে সে ক্ষেত্রে ব্যয় করতে হচ্ছে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা। সরকার বেতন বৃদ্ধি করলেও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ কৃষকদের সেচচার্জ বৃদ্ধি করতে পারছে না। কারণ কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের দাম প্রয়োজনীয় হারে বৃদ্ধি পায়নি।