বিপিও সামিট উদ্বোধনকালে সজীব ওয়াজেদ জয় ১৮ সালের মধ্যে বিপিও খাতে ১ বিলিয়ন ডলার আয় করবে বাংলাদেশ
দীপক চৌধুরী : দেশের বড় আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি উৎসব বিপিও (বিজনেস প্রসেজ আউটসোর্সিং) সামিট-২০১৬ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বিপিও খাতে ’১৮ সালের মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার আয় করবে বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে দুদিনব্যাপী এই আয়োজনের উদ্বোধন করেন সজীব ওয়াজেদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন সংস্থার (আইটিইউ) মহাপরিচালক হাওলিন ঝাও।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, তথ্য-প্রযুক্তিসহ সব ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়ন সূচক উপরের দিকে। ২০২১ সালের ভেতরে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে। ‘বিপিও সামিট ২০১৬’ আয়োজনের মধ্যে বিশ্বের কাছে বিপিও ক্ষেত্রে বাংলদেশের সাফল্যের বিষয় তুলে ধরা হবে।
জয় বলেন, আমরা প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ই-লার্নিং ল্যাব তৈরি করেছি। আগামীতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। শিক্ষার্থীদের জন্য সরকার ইতোমধ্যে ই-বুক তৈরি করছে। কিছুদিনের মধ্যেই আমরা ইলেক্ট্রনিক ভার্সন বই তৈরি করব। প্রতি বছর ৩০ হাজার শিক্ষার্থী কম্পিউটার সায়েন্স থেকে পাস করে বের হচ্ছে। তাদের বিভিন্ন সেক্টরে কাজের ক্ষেত্র তৈরি করছে সরকার।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বিপিও ক্ষেত্রে ভালো করার সব সম্ভাবনা বাংলাদেশে রয়েছে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু দেশকে ‘সোনার বাংলা’ হিসেবে গড়ে তোলার কাজে হাত দিয়েছিলেন। বর্তমান সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তোলার কাজ করে যাচ্ছে।
আইটিইউ মহাপরিচালক হাওলিন ঝাও বলেন, বাংলাদেশ বিপিও সেক্টরে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। এই ধারা বজায় রাখতে হবে। বিপিও সেক্টরে এগিয়ে যাওয়া দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বার্ষিক আইসিটি খাতে ৫ বিলিয়ন ডলার আয় হবে, এর মধ্যে বিপিও ক্ষেত্রে আয় হবে ১ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশকে তথ্য-প্রযুক্তিতে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। এর ফলে বাংলাদেশে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা বিপিও ব্যবসার অগ্রগতি সন্তোষজনক এবং এর বর্তমান বাজার মূল্য ১৮০ মিলিয়ন ডলার।
দ্বিতীয় বিপিও সামিটের লক্ষ্য সম্পর্কে জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, এই সামিটের মাধ্যমে বিশ্বের কাছে বিপিও খাতে আমাদের দক্ষতার কথা যেমন তুলে ধরতে চাই, তেমনি চাই আমাদের স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি সেক্টরে বিপিও খাতের সম্প্রসারণ। বাংলাদেশের বিপিও সেক্টরের সাফল্যের গল্পগুলো সবাইকে জানাতে চাই। দেশের তরুণদের কাছে এই সেক্টরকে অন্যতম একটি কাজের ক্ষেত্র হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী শাহজাহান মাহমুদ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্য) সভাপতি আহমাদুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুদিনের আয়োজনে ২০ জন আন্তর্জাতিক তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন সেমিনার ও কর্মশালায় বক্তব্য রাখার কথা। এই আয়োজনে ২৫ হাজারের বেশি দর্শনার্থী উপস্থিতি থাকার কথা তারা অনুমান করেন।
সম্মেলনের প্রথম দিন ‘গভর্নমেন্ট প্রসেস আউটসোর্সিং : গ্লোবাল বেস্ট প্র্যাকটিসেস’, ‘প্রোটেকটিং ডেটা অ্যান্ড প্রাইভেসি ইন দ্য কানেক্টেড নেটওয়ার্ক ওয়ার্ল্ড’, ‘অপরচুনিটিজ ইন লোকাল অ্যান্ড গ্লোবাল বিপিও ফর ইউথ’, ‘বিগ ডেটা এনালাইসিস ফর নিউ হরাইজন ইন বিজনেস ইন্টেলিজেন্স’, ‘ট্রেনিং ওয়ার্কশপ ফর কলসেন্টার এজেন্টস’ এবং ‘চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড সলিউশনস ফর ওভারকামিং হার্ডেলস ইন আউটসোসিং অব গভর্নমেন্ট সার্ভিসেস’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
আজ দ্বিতীয় ও শেষ দিন সন্ধ্যা ৬টায় বলরুমে বিপিও সামিটের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এদিন দেশের বিপিও খাতের সফল উদ্যোক্তাদের পুরস্কৃত করা হবে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি