ভারতের যা যা প্রয়োজন বাংলাদেশ দিয়েছে ভারত দেয়নি : কিশলয় ভট্টাচার্য
আরিফুর রহমান : দিল্লির নিরাপত্তা বিশ্লেষক কিশলয় ভট্টাচার্য বিবিসি বাংলাকে দেওয়া গতকাল বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, গত ৩০ বছর ধরে আমরা দেখছি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যখন কিছু একটা হয় ঠিক তার পরে হয়তো দুটো দেশ মিলে আলোচনা করে এবং কিছু তথ্য আদান-প্রদান হয়। কিন্তু তারপরে ফলোআপ কোনো দেশই করে না। তিনি বলেন, ২০০৯-১০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের কাছ থেকে ভারতের যতটা পাওয়া দরকার ছিল সেটা পায়নি। ২০১০ সাল থেকে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতের যা যা প্রয়োজন বাংলাদেশ সেখানে ভালভাবে সাড়া দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের যতটুকু ভূমিকা রাখা উচিত এবং সহযোগিতা করা উচিত, ভারত তা কতটুকু সিরিয়াসভাবে দেখে সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।
কিশলয় বলেন, বাংলাদেশে যেসব জঙ্গিদল রয়েছে তারা যাতে ভারতের কোনো জঙ্গি দলের কাছ থেকে সহযোগিতা নিতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে ভারতকে বলে আসছে। বাংলাদেশের কর্মকর্তারা প্রায়ই বলেন তারা ভারতের কর্মকর্তাদের সাথে যখন বৈঠক করেন তখন একটা লিস্ট দেন যার মধ্যে শুধু জঙ্গিদের নাম থাকে না, সাধারণ অপরাধীদের নামও থাকে কিন্তু ভারত এইসব ব্যাপারে ভারতের তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যায় না।
এই মানসিকতা কেন তৈরি হয়েছে সে প্রসঙ্গে কিশলয় ভট্টাচার্য বলেন, পদক্ষেপ না নেওয়ার দুটো কারণ রয়েছে। তার একটা হল ঐ তালিকাতে বেশিরভাগ ক্রিমিনালদের নাম, জঙ্গিদের নাম কম। যে ধরনের সন্ত্রাসী বা জঙ্গি হোক না বা ভারতের যতটুকু ভূমিকা রাখা দরকার সেটা তারা করছে না। ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও আসাম এই চারটি রাজ্যের সাথে চার হাজার কিলোমিটার সীমান্ত আছে। সেই চার হাজার কিলোমিটারে ৬০টি চোরাচালানের পয়েন্ট আছে। সেই পয়েন্টগুলো দিয়ে শুধু গরু আর বন্দুক চালানো হয় না আরও অনেক কিছু যায় সেখান দিয়ে। অন দ্যা গ্রাউন্ড যদি কো-অপারেশন না থাকে তাহলে এগুলো বন্ধ করা সম্ভব হবে না।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তার প্রশ্নে মূল চ্যালেঞ্জটা কোথায় হবে সে প্রসঙ্গে কিশলয় ভট্টাচার্য বলেন, দুই দেশের মধ্যে মূল চ্যালেঞ্জটা হবে মৌলবাদকে কিভাবে বিলুপ্ত করা যায়। আইএসের প্রভাব বাংলাদেশে বা ভারতে কতটা প্রভাব পড়েছে সেটা দেখতে হবে। বাংলাদেশ বার বার বলছে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর সাথে আইএসের কোােন সংযোগ নেই এটা দেশের জঙ্গিরা ঘটাচ্ছে। কিন্তু বাইরের বিশেষজ্ঞরা বলছে, আইএসের প্রভাব বাংলাদেশে আছে। আইএস যতবেশি বাংলাদেশ এবং ভারতের কাছে চলে আসবে সেটা নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশ তত বেশি আলোচনা করতে হবে আইএসের প্রভাব কতটা আছে এবং কিভাবে আইএসের প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়া যায়। সম্পাদনা : রাশিদ রিয়াজ