জঙ্গি আব্দুল্লাহর মুখ দেখতে চান না মা মোসলেমা
মাসুদ আলম : ঢাকার কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় নিহত নয় জঙ্গির একজন দিনাজপুরের আব্দুল্লাহকে এলাকার মানুষ চেনে মোতালেব হোসেন নামে। তার বাবা ও ভাইকে লাশ শনাক্তের জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছে পুলিশ।
আব্দুল্লাহর বাড়ি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার বল্লবপুর গ্রামে। তবে ছোটবেলা থেকে পারবারিকভাবে তাকে মোতালেব হোসেন নামে ডাকা হতো বলে তার ভাই আবুল কালাম জানান। চার ভাই এক বোনের মধ্যে আব্দুল্লাহ চতুর্থ। আব্দুল্লাহর মুখ দেখতে চান না মা মোসলেমা খাতুন। এলাকাবাসী চান না গ্রামে তার দাফন হোক।
আবুল কালাম বলেন, আব্দুল্লাহ বল্লবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণি পাস করার পর হাকিমপুর উপজেলার হিলি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। সেখান থেকে নওগাঁ জেলার আলাদিপুর হেফজ মাদ্রাসায় চলে যায়। সে সময় হুজুররা তার নাম পাল্টে আব্দুল্লাহ রাখে। সেখান থেকে সে ঢাকার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ফাজিল মাদ্রাসায় ফাজিল ১ম বর্ষে পড়াশোনা করতো। পড়ালেখার অজুহাতে সে এক বছর ধরে বাড়িতে আসেনি। তবে মাঝেমধ্যে মোবাইলে কথা বলতো সে। ৭/৮ দিন আগেও মোবাইলে কথা বলেছে সে। জানিয়েছে, কোরবানির সময় বাড়িতে আসবে। তবে সে যে জঙ্গি হয়েছে, সেটি তাদের জানা ছিল না।
এমন ভাই যেন আর কারও না হয় জানিয়ে তিনি বলেন, আব্দুল্লাহর লাশ নিতে চান না তারা। সে জাতির শত্রু। পাশাপাশি ভঙ্গ করেছে পরিবারের বিশ্বাস। তাকে বিশ্বাস করে কষ্ট করে পড়ালেখার খরচ পাঠানো হতো। কিন্তু সে এমনটি হবে, তা তারা কল্পনাও করেননি।
মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার কল্যাণপুরের জাহাজ বিল্ডিংয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে সন্দেহভাজন নয় জঙ্গি নিহত হন। পরে আঙ্গুলের ছাপ মিলিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভা-ার থেকে পরিচয় উদঘাটন করে
তারনাম ‘আব্দুল্লাহ’ বলে জানায় পুলিশ।
আব্দুল্লাহর বাবা ও অন্য ভাইয়েরা সবাই নির্মাণ শ্রমিক। আব্দুল্লাহর লাশ শনাক্ত করার জন্য বৃহস্পতিবার সকালে তার বাবা সোহরাব আলী ও ভাই নুরুল ইসলামকে ঢাকায় পাঠায় পুলিশ।
কালাম আরও বলেন, আব্দুল্লাহ ভালোভাবে লেখাপড়া করবে, ভালো চাকরি করবেÑ এ আশায় পরিবারের আয়ের একটি বড় অংশ তার পেছনে ব্যয় করা হতো। সে আমাদের শ্রমের টাকায় মানুষ হত্যার যে পাপাচার করেছে তার কোনো ক্ষমা নেই। পরিবারের কেউ তার মুখ দেখবে না, আমরা তার লাশ নেব না। ওই লাশ বল্লবপুর গ্রামের কোথাও দাফন করতে দেওয়া হবে না। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম