পলাতক জঙ্গিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গিদের ৩ জন নর্থসাউথ ও ৩ জন মাদ্রাসার ছাত্র
আজাদ হোসেন সুমন, মাসুদ আলম ও সুজন কৈরী : অপারেশন স্টর্ম এ নিহত ৯ জঙ্গির মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ৮ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, তাদের মধ্যে ৩ জন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৩ জন মাদরাসার শিক্ষার্থী। বাকি দুইজনের মধ্যে একজন নোয়াখালী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র এবং অপরজন স্বল্পশিক্ষিত। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যাওয়া জঙ্গি ইকবালকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, কল্যাণপুরে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহতদের মধ্যে তাজ-উল-হক রাশিক, আকিফুুজ্জামান খান, সাজাদ রউফ ওরফে অর্ক নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এছাড়া আব্দুল্লাহ, আবু হাকিম নাইম, রায়হান খান মাদরাসার ছাত্র। বাকি দুইজনের মধ্যে মো. জোবায়ের হোসেন নোয়াখালী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র এবং মো. মতিয়ার রহমান ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে বলে জানা গেছে। মনিরুল ইসলাম জানান, নিহত আব্দুল্লাহ কওমি মাদরাসা থেকে দাওড়া পাস করেছে। এরপর তিনি কওমি মাদরাসা ত্যাগ করে আলিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল পাস করে। এছাড়া আরেক মাদরাসা শিক্ষার্থী রায়হান কবির ওরফে তারেক হুজি কমান্ডার ছিল। সে আশুলিয়া পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত। সে তারেক নামে পরিচিত থাকলেও তার পরিবারের কেউ তাকে তারেক নামে চিনতো না। রায়হান প্রায় ১ বছর ধরে নিখোঁজ। পরিবারের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। মনিরুল ইসলাম বলেন, গুলশান হামলায় যারা নিহত হয়েছে, তাদের সঙ্গে কল্যাণপুরে নিহতদের যোগাযোগ ছিল। অপারেশন শেষে উদ্ধার হওয়া জিনিসপত্র, বিস্ফোরকসহ সকল উপকরণই তা প্রমাণ করে। এদের মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে ইকবাল নামে এক জঙ্গি পালিয়ে গেছে, তবে তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। তার সন্ধানে কাজ করছে পুলিশ। পুলিশ জানায় ইকবালকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। ইকবালকে খুব শিগগিরই গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে বলে পুলিশ দাবি করেছে। নিহত নয় জঙ্গির মধ্যে রায়হান কবির ওরফে তারেক গুলশানে হামলাকারী জঙ্গিদের প্রশিক্ষক ছিলেন। রায়হান কবিরের বাবার নাম শাহজাহান কবির। তার বাড়ি রংপুরের পীরগাছা উপজেলায়। রায়হান কবির কখনও কখনও তারেক নামও ধারণ করছেন। গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলাকারী জঙ্গিদের অন্যতম প্রশিক্ষক ছিলেন এই রায়হান কবির। পুলিশ জানিয়েছে, রায়হান জেএমবির ঢাকা অঞ্চলের কমান্ডার ছিলেন। সে আশুলিয়ায় পুলিশের উপর হামলায় অংশ নিয়েছিল। ওই মামলায় তিনি অভিযুক্ত ছিলেন। হলি আর্টিজান হামলায় অংশ নেওয়া জঙ্গিদের গাইবান্ধায় প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন রায়হান বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি