মোস্তাফিজার রহমান বাবলু, রংপুর : কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ অভিযানে নিহত আরও এক জঙ্গির পরিচয় মিলেছে। নিহত জঙ্গির নাম রায়হান কবির। সে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ইটাকুমারি ইউনিয়নের পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়া গ্রামের শাহাজাহান কবিরের ছেলে। রংপুরে চাঞ্চল্যকর জাপানি নাগরিক হোসিও কুনিও, মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা ও বাহাই নেতা রুহুল আমিনকে গুলি করে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি ও জেএমবির রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার মাসুদ রানার প্রতিবেশী নিহত জঙ্গি রায়হান। এদিকে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হবার পর থেকে ওই বাড়িতে পুলিশি পাহারা জোরদার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে নিহত জঙ্গি রায়হানের গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, তার মা রাহেলা বেগম শয্যাশায়ী হয়ে বিছানায় শুয়ে রয়েছেন। প্রতিবেশী আমেনা বেগম জানায়, তিনি কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ। ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বেশ কয়েকবার জ্ঞান হারিয়ে বিছানায় শয্যাশায়ী। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি তিনি। রায়হানের বাবা শাজাহান কবিরও অসুস্থজনিত কারণে দুদিন আগে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন বলে আমাদের অর্থনীতিকে জানান রায়হানের চাচা আব্দুর রউফ। রায়হান পড়ালেখা করতো স্থানীয় দামুর চাকলা দেওয়ান সালেহ আহম্মেদ দাখিল মাদ্রাসায়। সেখান থেকে দাখিল পাস করার পর দেউতি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয় সে। বেশিদিন কলেজে পড়ালেখা করেনি রায়হান। প্রায় দুই বছর আগে পোশাক কারখানায় কাজ করার কথা বলে ঢাকা চলে যায়। মাঝে মাঝে বাড়ি আসতো এবং যোগাযোগ রাখতো। তিনি আরও জানান, সর্বশেষ গত রমজানের দুদিন আগে বাড়ি আসার পর পহেলা রোজার দিন ঢাকা যাবার কথা বলে চলে যায় রায়হান। এরপর থেকে আর পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ অভিযানে নিহতের তালিকায় রায়হানের নাম ও ছবি দেখে তারা নিশ্চিত হন। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট রায়হান। বড় ভাই আব্দুর রাজ্জাক টাঙ্গাইলে একটি তাঁত কারখানায় কাজ করেন। সেখানেই পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, জেএমবির রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার মাসুদ রানার বাড়িসংলগ্ন রায়হানের বাড়ি। মাসুদ রানা বর্তমানে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে। এছাড়াও ওই তিন মামলার অপর এক আসামি জেএমবি সদস্য ইছাহাক আলীর বাড়িও একই এলাকায়। মাসুদ ও নিহত রায়হানের বাড়িসংলগ্ন একটি মসজিদ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, জেএমবির অন্যতম নেতা বাংলাভাইয়ের সহযোগিতায় ওই মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়। রায়হান ২০১৩ সালে এ মাদ্রাসা থেকেই দাখিল পাস করে।
পীরগাছা থানা পুলিশের ওসি আমিনুল জানান, নিহত জঙ্গি রায়হানের বাড়ি পুলিশি প্রহরায় রাখা হয়েছে। তার সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা