ছাতক-দোয়ারায় বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
নুর উদ্দিন, ছাতক (সুনামগঞ্জ) : ছাতকÑদোয়ারাবাজারে বন্যার পানি কমতে শুরুর সাথে সাথে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। উপজেলা সদরের সাথে গ্রামাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় পানি বন্দি অবস্থায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ। বন্যার পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কৃষকের বীজতলা, রোপা-আমন ক্ষেত ও শাক-সবজির বাগান। গত এক সপ্তাহে বন্যার পানিতে তলিয়ে শিশুসহ ৪ জনের সলিল সমাধি ঘটেছে।
সুরমা, চেলা, পিয়াইন, বটেরখাল, বৈঠাখালী, খাসিয়ামারা, চিলাই, চেলা, মরাচেলা ও চলতি নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে বেড়িবাঁধসহ গ্রামীন রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। পানির স্্েরাতে দোয়ারার সুরমা ইউনিয়নের খাসিয়ামারা নদীর টিলাগাঁও রাবারড্যাম’র বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। ছাতকের ইসলামপুর ইউনিয়নের রতনপুর-মনিপুরীবস্তি, রাতগাঁও-মুক্তিরগাঁও ও গোয়ালগাঁও বেড়িবাধ ভেঙ্গে প্রবল বেগে পানি প্রবাহিত হওয়ায় অনেক সড়ক পানিতে তলিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বন্যায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দোয়ারার সীমান্ত সংলগ্ন সুরমা ইউনিয়ন, ছাতকের ইসলামপুর ও নোয়ারাই ইউনিয়ন। প্রবল স্রোতের কারণে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীতে পাথরবাহী কার্গো ও ভলগেট নৌকায় পাথর-বালু লোডিং-আনলোডিংয়ে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় কয়েক হাজার পাথর শ্রমিক পড়েছে বিপাকে। উপজেলা সদরের সাথে শতাধিক গ্রাম-গঞ্জের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে ছাতক-দেয়ারা সড়কসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। অর্ধশত বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রয়েছে।
দোয়ারাবাজার-নৈনগাও-ছাতক পাকা সড়কের নৈনগাওয়ে অবস্থিত দুটি ছোট ব্রীজ এবং ব্রীজ সংলগ্ন রাস্তার কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। পানিবন্দি মানুষ বিশুদ্ধ পানির অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দিন দিন বাড়ছে রোগবালাই। বন্যা দুর্গত মানুষের জন্য এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কোন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
সুরমা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ জাহান মাস্টার জানান, বন্যা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। ছাতক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জগলুল হায়দার জানান, বিভিন্ন এলাকায় ৪৭ হেক্টর রোপা-আমন বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে।