গৌতম চক্রবর্তী: আজও পৃথিবীর বহু দেশ, বহু অঞ্চল তার পদানত, কিন্তু এ জন্য তাকে কোনো তরবারি ব্যবহার করতে হয়নি। এই জয় আইডিয়ার জয়, দর্শনের দিগি¦জয়। পৃথিবীতে এর আগে বহু দিগি¦জয় হয়েছে, রামচন্দ্র থেকে পঞ্চপা-ব অশ্বমেধের ঘোড়া ছুটিয়েছেন। কিন্তু মানুষের দুঃখ দূর করার জন্য কাষায় বস্ত্র পরিহিত, মু-িতমস্তক শ্রমণদের দিগি¦জয় এই প্রথম। বোধিজ্ঞান লাভের পর পাঁচ শিষ্যকে গৌতম বুদ্ধ তাই বলেছিলেন, ‘যাও, মানুষের দুঃখ দূর করতে এ বার তোমরা চার দিকে ছড়িয়ে পড়ো।’ ঋষিপত্তন, মানে আজকের সারনাথে দাঁড়িয়ে এটাই ছিল শিষ্যদের প্রতি তার প্রথম নির্দেশ। অতঃপর দ্বিতীয় : এক দিকে দুজন যেয়ো না। মানে, প্রতিটি দিকই কভার করতে হবে, কিছু বাকি রাখা চলবে না।
এভাবেই ছড়াবে তার আইডিয়ার দিগি¦জয়। এখন নেপালে জন্মালে, তিন দশকের বেশি সময় ধরে বিহার উত্তরপ্রদেশে ঘুরে বেড়ালে, এই দিগি¦জয়ীর হাতে হয়তো থাকত কালাশনিকভ। কিন্তু তিনি তো সময়ের হাতে বন্দি নন। নইলে তার কয়েক হাজার বছর পরে জন্মেও ভারতের সংবিধান-প্রণেতা অম্বেডকর কেন আশ্রয় খুঁজবেন বৌদ্ধধর্মে? মায়ানমার থেকে থাইল্যান্ড, চীন, জাপান হয়ে ইংল্যান্ড, আমেরিকাতেই বা কেন তিনি হয়ে উঠবেন মানুষের প্রেরণা! শুধু দেশ নয়, কালও সেই দিগি¦জয়ীর অধীনে।