বাংলা ভাইয়ের গড়া মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিলেন রায়হান
মোস্তাফিজার রহমান বাবলু, রংপুর : কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ অভিযানে নিহত ৯ জঙ্গির একজন রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ইটাকুমারি ইউনিয়নের পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়া গ্রামের শাহজাহান কবিরের ছেলে রায়হান কবির। বাংলা ভাইয়ের হাতে গড়া জামে মসজিদের মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালনের একপর্যায়ে ঢাকায় গিয়ে জঙ্গি প্রশিক্ষক হয় সে। রংপুরে চাঞ্চল্যকর জাপানি নাগরিক হোসিও কুনিও, মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা ও বাহাই নেতা রুহুল আমিনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি ও জামাআ’তুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার মাসুদ রানার প্রতিবেশী নিহত জঙ্গি রায়হান।
এদিকে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে ওই বাড়িতে পুলিশি পাহারা জোরদার করা হয়েছে। নিহত জঙ্গি রায়হানের গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, তার মা রাহেলা বেগম শয্যাশায়ী হয়ে বিছানায় শুয়ে রয়েছেন।
প্রতিবেশী আমেনা বেগম জানায়, তিনি কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ। ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বেশ কয়েকবার জ্ঞান হারিয়ে বিছানায় পড়ে রয়েছেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি তিনি। রায়হানের বাবা শাজাহান কবিরও অসুস্থজনিত কারণে দুদিন আগে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন।
আমাদের অর্থনীতিকে রায়হানের চাচা আব্দুর রউফ জানান, ছোট বয়স থেকেই নম্র স্বভাবের রায়হান পড়ালেখা করতো স্থানীয় দামুর চাকলা দেওয়ান সালেহ আহম্মেদ দাখিল মাদরাসায়। সেখান থেকে দাখিল পাস করার পর দেউতি কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হয় সে। বেশিদিন কলেজে পড়ালেখা করেনি রায়হান। প্রায় দুই বছর আগে পোশাক কারখানায় কাজ করার কথা বলে ঢাকা চলে যায়। মাঝে মাঝে বাড়ি আসতো এবং যোগাযোগ রাখতো। তিনি আরও জানায়, সর্বশেষ গত রমজানের দুদিন আগে বাড়ি আসার পর পহেলা রোজার দিন ঢাকা যাওয়ার কথা বলে চলে যায় রায়হান। এরপর থেকে আর পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ অভিযানে নিহতের তালিকায় রায়হানের নাম ও ছবি দেখে তারা নিশ্চিত হন। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট রায়হান। বড় ভাই আব্দুর রাজ্জাক টাঙ্গাইলে একটি তাঁত কারখানায় কাজ করেন। সেখানেই পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি।
এদিকে, খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, জেএমবির রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার মাসুদ রানার বাড়িসংলগ্ন রায়হানের বাড়ি। মাসুদ রানা বর্তমানে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে। এছাড়াও ওই তিন মামলার অপর এক আসামি জেএমবি সদস্য ইছাহাক আলীর বাড়িও একই এলাকায়। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি