বাংলাদেশে আটকেপড়া পাকিস্তানিরা এখনো নওয়াজ শরিফের দিকে চেয়ে আছে
এম রবিউল্লাহ : বাংলাদেশে আটকেপড়া পাকিস্তানি বা বিহারিরা এখনো মনে করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ তাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফেরত নিয়ে যাবেন। সৌদি আরবের সাবেক কূটনীতিক ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. আলী আল গামতি সৌদি গেজেটের একটি নিবন্ধে এমন মন্তব্য করেছেন। তিনি মনে করছেন, বাংলাদেশে আটকেপড়া পাকিস্তানিদের ব্যাপারে ইসলামাবাদ গুরুত্ব দেবে। ডেইলি টাইমসের নিবন্ধ
বাংলাদেশে আটকেপড়া পাকিস্তানিরা পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার আশা করলেও নওয়াজ শরিফ ক্ষমতায় আসার পর এ নিয়ে কোনো বক্তব্য রাখেননি। যদিও তিনি রাজনৈতিক অনেক ইস্যু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
গামদি লিখেন, আমি একাধিকবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কাছে আবেদন করেছি যাতে বাংলাদেশে আটকেপড়া পাকিস্তানের নাগরিকদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়। তাদের যাতে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন করা হয়। এ ইস্যুতে পাকিস্তানের সরকার তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জনাকীর্ণ ক্যাম্পে পাকিস্তানের নাগরিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তারা দারিদ্র্য ও রোগের সঙ্গে লড়াই করছে। বাংলাদেশে সৌদি আরবের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স থাকাকালে গামদি ঢাকার একটি ক্যাম্প পরিদর্শনের কথাও স্মরণ করেন।
তিনি তার প্রবন্ধে বলেন, আমি দেখি ক্যাম্পে তারা প্রাণীর মতো বসবাস করছে। তারপর আমি উপলব্ধি করি সাধারণত প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব এ অসহায়দের সহায়তায় এগিয়ে এসে তাদের দুর্দশা লাঘব করা।
সৌদি আরবের এ কূটনীতিক লিখেন, আমি দুই দশক আগে বাংলাদেশের ক্যাম্প পরিদর্শন করেছি।
গামদি বলেন, পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউল হক বাংলাদেশে আটকেপড়াদের ভোগান্তি কমিয়ে তাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
জেনারেল জিয়াউলের মৃত্যুর পর নওয়াজ শরিফ প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসেন। প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এ ইস্যুটি নতুন করে সামনে আসে। তিনি কয়েকটি বিহারি পরিবারের দায়িত্ব নিয়ে পাকিস্তানে ফেরত আনেন। তাদের একত্রিত করে নিজ দেশে বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়। পাঞ্জাব প্রদেশের সরকার তাদের পুনর্বাসনের জন্য জমি দান করে। তবে নওয়াজ শরিফের প্রথমবার ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হলে এ ইস্যুটি আর সামনে অগ্রসর হয়নি।
দ্বিতীয় মেয়াদে নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর এ ইস্যুটি নিয়ে উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেন। তবে জেনারেল পারভেজ মোশাররফের নেতৃত্বে সেনা অভ্যুত্থানে বিহারিদের অভিবাসনের পরিকল্পনাটি স্থগিত হয়ে যায়। মোশাররফের সরকার পাকিস্তানের ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশে আটকেপড়া পাকিস্তানিদের পুনর্বাসনে জমি দান প্রক্রিয়া থমকে যায়। সম্পাদনা : রাশিদ রিয়াজ