মাতারবাড়ির দরপত্র ‘স্থগিত নয় সময় বেড়েছে’
ডেস্ক রিপোর্ট : গুলশান হামলার প্রেক্ষাপটে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে দরপত্র প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ থাকার খবর জাপানি গণমাধ্যমে এলেও তা নাকচ করে প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ বলছে, স্থগিত নয়, দরপ্রস্তাব জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়েছে। বিডিনিউজ
শুক্রবার জাপান টাইমসে খবর প্রকাশের পর গতকাল শনিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বর্তমান পরিস্থিতিতে দরপত্র নিয়ে জাপানি কোম্পানি দুটির অনাগ্রহের বিষয়টি স্বীকার করেছিলেন। পরে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল কাশেম বিদেশ থেকে টেলিফোনে বলেন, ‘স্থগিত না, সময় বাড়ানো হয়েছে।
‘সময় বাড়ানো, এটা নরমাল প্রসিডিউর। এ পরিস্থিতিতে তারা বলেছে, সময় দিতে হবে। একমাস সময় দিয়েছি। ২৪ জুলাই ছিল, এটা বাড়িয়ে ২৪ আগস্ট করেছি। এটা স্থগিতের কিছু বিষয় না।’
জাপানি অর্থ সহায়তায় বাংলাদেশের অন্যতম বড় এ প্রকল্পের দরপত্রে জাপানের তোশিবা করপোরেশন ও মিতসুবিসি, হিতাচি পাওয়ার সিস্টেম লিমিটেড অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জাপান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গুলশানে জঙ্গিহামলার প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তার কারণে বাংলাদেশ সরকার দরপত্র প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল গতকাল সকালে বলেছিলেন, ‘ওরা (দরপত্রে যারা অংশগ্রহণ করবেন) মনে করছে যে, এই মুহূর্তে টেন্ডার না করাটা বেটার।’
গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে নিহত বিদেশিদের মধ্যে সাতজন ছিলেন জাপানের নাগরিক, যারা ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্পে কাজ করছিলেন।
গত বছরের আগস্টে মহেশখালীর মাতারবাড়িতে ১২০০ মেগাওয়াট ‘অত্যাধুনিক’ ক্ষমতার এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৩৬ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে সরকার।
কয়লা উঠা-নামার জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গেই একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের বিষয়টিও প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা এ প্রকল্পে ২৯ হাজার কোটি টাকা দেবে।
মাতারবাড়ি আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রোজেক্টের কাজ ২০২৩ সালের অক্টোবরে শেষ করার আশা করছে সরকার।
বিদ্যুৎসংকটে থাকা বাংলাদেশে বর্তমানে উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রায় ৭০ শতাংশই আসে গ্যাস থেকে; কয়লা থেকে আসে ৩ শতাংশেরও কম। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগুচ্ছে, যার মধ্যে অর্ধেক আসবে কয়লা থেকে।
প্রকল্পের সার সংক্ষেপে বলা হয়েছে, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ‘আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি’ ব্যবহার করা হবে, যাতে কেন্দ্রের কর্মদক্ষতা হবে ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ।
বাংলাদেশের বর্তমানে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর গড় কর্মদক্ষতা ৩৪ শতাংশের বেশি নয়।
মহেশখোলীতেই প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এ লক্ষ্যেই জাপান ছাড়াও আরও তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানে চীন ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক ও যৌথ উদ্যোগ চুক্তি করেছে সরকার। সম্পাদনা : এম আলম