কাল মাতৃদুগ্ধ দিবস কর্মক্ষেত্রে ব্রেস্টফিডিং কর্নার করা হয়নি
রিকু আমির : সরকার প্রধানের কয়েকদফা নির্দেশনা থাকার পরও সরকারি হাসপাতালসহ অফিস, ব্যাংক-বিমা প্রতিষ্ঠান এবং শপিং মলে ব্রেস্টফিডিং কর্নার স্থাপন করা হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এভাবে চললে শিশুপুষ্টি, নিরাপদ মাতৃত্ব কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। এমন অবস্থার মধ্যদিয়ে কাল ১ আগস্ট থেকে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ দিবস উদযাপন শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯, ২০১০, ২০১১ এবং ২০১৪ সালে ব্রেস্টফিডিং কর্নার গড়ে তোলার নির্দেশনা দেন। অথচ সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই। বেসরকারি ব্যাংকে কাজ করেন রীনা জাহান। সন্তান জন্মানোর পাঁচ মাস পরে তিনি কাজে যোগদান করতে বাধ্য হন। সে সময় তার মেয়ে বুকের দুধ খেতো। মেয়েকে বাড়িতে রেখে এসে মেয়ের খাদ্য যেমন নিশ্চিত করতে পারেননি তেমনি নিজেকেও পড়তে হয়েছে নানান বিড়ম্বনায়। মায়ের বুকের দুধের বিকল্প হিসাবে নামকরা এক বিদেশি কোম্পানির গুঁড়ো দুধ খাওয়ালে তার সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়ে। একদিন চিকিৎসক জানালেন, মায়ের দুধের পরিবর্তে নামি ওই গুঁড়ো দুধই সন্তানের অসুস্থতার কারণ।
তাজমিন বলেন, যদি আমার ব্যাংকে মায়েদের জন্য একটি কর্নার রাখা হতো তা হলে আমাকে আর আমার সন্তানকে দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। মেয়েটি আমার অপুষ্টি নিয়ে বেড়ে উঠতো না।
সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্টফিডিং কর্নার স্থাপন করার জন্য চিঠি দিয়েও কোনো জবাব পাননি দাবি করে বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশনের পরিচালক খুরশিদ জাহান বলেন, কর্মজীবী মায়েরা কী সন্তান জন্মানোর পরে কাজ করবে না? তাদের কী আর কাজের দরকার নেই? অফিসে যদি বাচ্চা দেখার ব্যবস্থা না থাকে তাহলে মা কাজ করবে কী করে। অনেকেরই বাসায় শিশু সন্তানকে দেখার মতো কেউ নেই। তাছাড়া মা সন্তানকে বাসায় রেখে আট ঘণ্টা কাজ করলে ব্রেস্টফিডিংতো বন্ধ হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফি অ্যান্ড হেলথ সার্ভের (বিডিএইচএস) থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের এক জরিপে পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশুদের এক তৃতীয়াংশ শিশু খর্বকায়, আর ৩৩ শতাংশ শিশুর ওজন কম, ১৪ ভাগ শিশু কৃশকায় (লম্বার তুলনায় ওজন খুবই কম)। এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিডিংয়ের যে হার একশ’ ভাগ হবার কথা, সেখানে আমাদের রয়েছে ৫৫ শতাংশ। শিশুর পুষ্টিমান নিশ্চিতে সব জায়গায় ব্রেস্টফিডিং কর্নার চালু করা প্রয়োজন। নারীদের অনেক বড় কাজের একটা ক্ষেত্র হলো পোশাক কারখানা, সেখানেও এই ফিডিং সেন্টার রাখার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ডা. এসকে রায় বলেন, ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশন বিজিএমইএ এবং এফবিসিসিআইর সঙ্গে বৈঠক করেছে, প্রতিটা পোশাক কারখানায় ফিডিং সেন্টার রাখার জন্য কর্তৃপক্ষ সম্মত হয়েছেন। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম