বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর বঞ্চনা অবসানের বর্ষপূর্তি পালিত
পঞ্চগড় প্রতিনিধি : বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর ৬৮ বছরের বঞ্চনার অবসানের বর্ষপূর্তি ছিল কাল। ১৯৭৪ সালের স্থলসীমান্ত চুক্তি (মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি) বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিনিময় হয় ১৬২টি ছিটমহলের। ফলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ভারতীয় ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশের ভূ-খ- এবং ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ভারতের ভূ-খ-ে অন্তর্ভুক্ত হয়।
এতে দুই দেশেরই মানচিত্র পায় পূর্ণতা আর ছিটমহলবাসী পায় দীর্ঘ ৬৮ বছরের অবরুদ্ধ জীবন থেকে মুক্তি। অবসান ঘটে দীর্ঘদিনের বঞ্চনা আর মানবিক সমস্যার। দিনটির স্মরণে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীরা নানা আয়োজনে পালন করছে তাদের প্রথম বিজয় দিবস।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিলুপ্ত গাড়াতি ছিটমহলে সকালে আনন্দ র্যালির পরপরই ফোরকানিয়া মাদ্রাসা মাঠে শুরু হওয়া খেলাধুলা চলবে দিনব্যাপী। এদিকে ৬৮ বছর পিছিয়ে পড়া ছিটমহলবাসীদের উন্নয়নে গত এক বছরে সরকার হাতে নিয়েছে ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা।
বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের নাগরিকত্বের পরিচয় নিশ্চিত করতে তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তকরণ ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ২০১১ সালের হেডকাউন্টিং অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পঞ্চগড়ের তিনটি উপজেলার ছিটমহলগুলোতে ২০ হাজার মানুষের গেজেট প্রদান করা হয়েছে। সে মোতাবেক ইতোমধ্যে ৯ হাজার ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিলুপ্ত গাড়াতি ছিটমহলের সাবেক চেয়ারম্যান মফিজার রহমান জানান, নতুন বাংলাদেশি হিসেবে এক বছর পূর্ণ হলো আজ। সে জন্য বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ গোলাম আযম জানান, বিলুপ্ত ছিটমহলবসীর প্রথম বিজয় দিবসে তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। তাদের আজকের বিজয় উৎসবের আয়োজনে জেলা প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবে। এছাড়া বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর জন্য নেওয়া সরকারের সব প্রকার উন্নয়ন কার্যক্রম অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ধারাবাহিকভাবে সম্পন্ন করা হবে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১১১টি বিলুপ্ত ছিটমহলের মধ্যে পঞ্চগড়েই ১১ হাজার ৯৩২ দশমিক ৮০ একর এলাকাজুড়ে রয়েছে ৩৬টি ছিটমহল। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা