উন্নয়ন নাকি ষড়যন্ত্র
রূপপুর নিউক্লিয়ার বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্যÑ বাংলাদেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় ঝুঁকিপূর্ণ নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনও কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। কোথাও জোর করে স্থাপন করতে পারলেও একসময় না একসময় জনগণ এর দূষণ ও ক্ষতির শিকার হয়ে প্রতিরোধ তৈরি করবেই। নিউক্লিয়ার বা বৃহৎ কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র না করে নবায়ণযোগ্য জ্বালানি (সৌর, বায়ু, বর্জ্য), গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎÑ প্রয়োজনে এলএনজি আমদানী করে হলেও, বিদ্যমান বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সর্বোচ্চ ব্যবহার ইত্যাদির মাধ্যমেই জ্বালানি সমস্যার সমাধান করতে হবে। তারপরেও যদি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করতেই হয়, তাহলেও সেটা করতে হবে একেবারেই ছোট আকারের, অনুর্ধ্ব ১০০ মেগাওয়াটের এবং সে ক্ষেত্রেও প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশের বিষয়টা মাথায় রেখে, জনগণের সম্মতি নিয়েই সেটা করতে হবে; জোর করে কোনো অবস্থাতেই কোনো ’উন্নয়ন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে না।
বিদ্যুৎ সংকট সমাধানের জন্য জাতীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের স্বার্থ ও প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশের গুরুত্ব মাথায় রেখে স্থালভাগে ও সমুদ্রের গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যদি বিদ্যমান গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সংস্কার করে একই পরিমাণ গ্যাস থেকে দ্বিগুণ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো হয়, প্রয়োজনে এলএনজি আমদানি করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যদি সৌরশক্তি-বায়ুশক্তি-বায়োগ্যাস ইত্যাদি নবায়ণযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে জাতীয় সক্ষমতা তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়, যদি এসব কাজে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা-জনস্বার্থ নিশ্চিত করা হয়Ñ তাহলে এসব প্রকল্পের বিরোধিতার কোনো কারণ থাকবে না।
লেখক : প্রকৌশলী ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন