তুরস্কে ‘মীরজাফরের গোরস্তান’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্যাপ্টেন মেহমেত কারবেকি। গত মাসে তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে যে ২ শতাধিক সেনা নিহত হয়েছিলেন মেহমেত তাদের একজন। ইতিমধ্যে সমাহিত করা হলেও তার দাফন করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। দাফনের আগে নাকি তাকে গোসল করানো হয়নি। এমনকি জীব-জন্তু রাখার ঘরে তাড়াহুড়ো করে তাকে দাফন করার আগে কেউ নাকি পবিত্র কোরআন থেকেও তেলাওয়াত করেনি। পালন করা হয়নি ইসলামী রীতির কোনো কিছুই। মেহমেতের কবরে কোনো স্মৃতিফলক নেই। আরও তিনজনের পাশে যন্ত্র দিয়ে খোঁড়া দুই মিটার গভীর কবরে তাকে সমাহিত করা হয়। গত সপ্তাতে ইস্তান্বুলের পূর্বের শহরতলিতে এক একখ- জমিতে যেসব বিদ্রোহী সেনাকে দাফন করা হয়েছে তাদের প্রথম ছিলেন মেহমেত। ইস্তান্বুলের মেয়র কাদির টপবাস এই গোরস্তানটিকে ‘বিশ্বাসঘাতকদের (মীরজাফরের) গোরস্তান’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, এখানে শুধু ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে নিহত সেনাদের দাফন করা হবে। মুসলিম অধ্যুষিত তুরস্কে অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ার জড়িত কিংবা মদদ দেয়ার অভিযোগে বিচার বিভাগ, সামরিক বাহিনী, বেসামরিক প্রশাসনসহ বিভিন্ন বিভাগ থেকে হাজার হাজার লোককে আটক অথবা বরখাস্ত করেছে। রয়টার্স
বাদ যায়নি গণমাধ্যমও। দেশটির অর্ধশতাধিক সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আটকের পাশাপাশি বরখাস্ত করা হয়েছে বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে।
জানা গেছে, তুরস্কের ধর্ম মন্ত্রণালয় নিহত বিদ্রোহী সেনাদের ইসলামী রীতি অনুযায়ী দাফনের ব্যবস্থা না করতে নির্দেশ দেন। এরপরই এভাবে তাদের দাফন করা হয়। তবে মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, তুরস্কের শীর্ষ আলেম মেহমেত গর্মেজ মীরজাফরের গোরস্তানকে সমর্থন দেননি। তিনি বলেছেন, এটা নিহতদের পরিবারের জন্য বেদনাদায়ক। এদিকে, ‘মীরজাফরের গোরস্তান’ নিয়ে দেশটির মানুষ সমালোচনামুখর। মানবাধিকার সংগঠনের পাশাপাশি সামাজিক গণমাধ্যমেও এর সমালোচনা হচ্ছে।