আনিসুর রহমান তপন : সারাদেশের বন্যা পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে বন্যার কারণে যাতে ক্ষয়-ক্ষতি যথাসম্ভব কম রাখা যায় সে দিকেও দৃষ্টি রাখতে বলেছেন তিনি। গতকাল সোমবার সকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকের অনির্ধারিত আলোচনাকালে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের প্রতি এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থিত একাধিক মন্ত্রী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বন্যার যে গতি-প্রকৃতি দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে আরও কিছুদিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে। উজানে যে পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে তাতে হঠাৎ করে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তাই সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট একাধিক মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে নজর রাখতে বলেছেন। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্ব থেকে একাধিক সদস্যকে নিয়ে বন্যা উপদ্রুত এলাকার দুর্গত জনসাধারণের সাহায্যার্থে মোট আটটি কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই কমিটির সদস্যরা বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তাসহ আনুষাঙ্গিক বিষয়ে সাহায্য সহযোগিতা করবেন। যাতে বন্যা উপদ্রুত এলাকার মানুষের কষ্ট না হয়। কমিটিকে বলা হয়েছে যাতে বন্যাদুর্গতদের প্রয়োজন হলে শুকনা খাবার বিতরণ করবে। কোথাও খাবার পানির সংকট হলে সে বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে কমিটি। এছাড়া কমিটি সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতির মনিটরিং করবে। এসময় প্রধানমন্ত্রী খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের কাছে দেশের খাদ্য মজুদ কি পরিমাণ আছে সেটা জানতে চান। সংকট মুহূর্তে পরিস্থিতি মোকাবিলায় যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে কিনা সেটাও জানতে চান। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে খাদ্যমন্ত্রী জানান, যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মজুদ আছে। কোনো রকম সমস্যা হবে না। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতিও সন্তোষজনক। এসময় প্রধানমন্ত্রী বন্যা উপদ্রুত এলাকায় এখন থেকেই শুকনা খাবার দেওয়া শুরু করার জন্য খাদ্যমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন। এরপরই স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে উপদ্রুত এলাকার চিকিৎসা সহায়তার জন্য কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং এ জন্য প্রস্তুতি কি সেটা জানতে চান। এছাড়াও প্রয়োজনীয় পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট আছে কিনা বা বন্যা উপদ্রুত এলাকায় ডায়রিয়া প্রতিরোধে পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন মজুদ আছে কিনা সেটাও জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে জানান, বন্যা পরিস্থিতি ও বন্যা পরবর্তী সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিসহ দ্রুত উপদ্রুত এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম