বিপ্লব বিশ্বাস : বিশ্বব্যাপী আলোচিত গুলশান হামলার পর আইএসের নামে দায় স্বীকারের বার্তা ও হামলাকারীদের ছবি ইন্টারনেটে এলেও বাংলাদেশ পুলিশ বরাবরই বলছে, হামলাকারীরা জেএমবির সদস্য। হামলাকারীরা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। তারা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য বলে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
বাংলাদেশে গত দেড় বছরে সংঘটিত জঙ্গি কায়দায় হত্যাকা-গুলোর জন্য জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলাটিম কিংবা হরকাতুল জিহাদকেই দায়ী করে আসছে পুলিশ। গুলশান হামলায় জেএমবি ছাড়া অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠনের জড়িত থাকার তথ্য পুলিশ পায়নি বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
তবে তিনি বলেন, ২০১৩ সালের দিকে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের নেতা জসীমউদ্দীন রাহমানীর নেতৃত্বে কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা একত্রিত হয়েছিলেন। তারা যৌথভাবে নিজেদের মতাদর্শ প্রচারে একমত হতে চেয়েছিলেন। তার কিছুদিনের মধ্যেই রাহমানীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গ্রেফতার করলে তাদের যৌথভাবে কাজ করার পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। পরে ‘জিহাদি গ্রুপ অব বাংলাদেশ’ নামে আনসারুল্লাহ, জেএমবি ও হুজির নেতা-কর্মীরা এক হওয়ার চেষ্টা করেও সফল হয়নি বলে জানান এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা। পারস্পরিক অবিশ্বাস ও মতপার্থক্যের কারণে তারা এক হয়ে কাজ না করতে পেরে বর্তমানে আলাদাভাবে নিজেদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে অস্তিত্ব¡ জানান দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা সব সময় কাজ করে।
এদিকে, গুলশানে হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রের উৎস পুলিশ জেনেছে বলে কয়েকদিন আগে জানিয়েছিলেন আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক। কিন্তু অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল জানালেন, মাস্টারমাইন্ড কারা- তাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। এই ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছেন এমন আট-নয় জনের নাম পাওয়া গেছে। সম্প্রতি বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান তিনি। এক্ষেত্রে জনসাধারণকে আশ্বস্ত করে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, জনস্বার্থে পুলিশ ব্লক রেইড দিচ্ছে। এখানে সাধারণ মানুষের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। সবার সহযোগিতায় অপরাধীদের ধরতে চায় পুলিশ। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি