
জঙ্গিবাদে মোটা অংকের অর্থ তারেক ও মীর কাসেম সম্পৃক্ত কিনা এখনো প্রমাণ মেলেনি
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : জঙ্গিদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে জঙ্গিবাদী কর্মকা-ে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। যাদের অর্থের চাহিদা বেশি, তাদের টার্গেট করে জঙ্গিরা সদস্য সংগ্রহ করছে। কারণ, ওইসব কিশোর ও তরুণরা পরিবারের কাছ থেকে চাহিদামাফিক অর্থ পায় না। এই অর্থ না পাওয়ার কারণে যখন তাদের অর্থের লোভ দেওয়া হয় এবং বলা হয় জঙ্গি কর্মকা- করলে ভালো অর্থ পাওয়া যাবে, তখন তারা লোভে পড়ে। ওই লোভে অনেকেই ঘর ছাড়ে। অর্থ ছাড়াও জঙ্গিদের কেউ কেউ মাদকের নেশায়ও ঘর ছেড়েছে।
সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে জঙ্গিরা জানিয়েছে, তারা যেমন খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায়, শহিদ হতে চায়, বেহেশতে যেতে চায়, তেমন তারা এমন কিছু কাজ করতে চায়, যাতে নিজেদের কোনো প্রত্যাশা অপূর্ণ না থাকে। এক-একজনকে জঙ্গি কর্মকা-ে সম্পৃক্ত করার জন্য কত টাকা দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে জানতে চাইলে সূত্র জানায়, মোটা অংকের অর্থ পাওয়া যায়। ওইসব অর্থ নিজ নামের ব্যাংক হিসাবে জমা নেওয়া হয় না; নগদে নেওয়া হয়। এ অর্থ পরিবারের কারও কারও নামে জমা করা হয়। জঙ্গিবাদে জড়ালে পুরো পরিবারের সব দেখভাল করা ও তাদের অর্থ দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দেওয়া হয়।
জঙ্গিবাদের অর্থায়ন কারা করছে, এই ব্যাপারে জানতে চাইলে সূত্র জানায়, এককভাবে কোনো ব্যক্তি জঙ্গিবাদের জন্য অর্থায়ন করছে না। একেকজন একেক স্তরে করছে। এরমধ্যে দেশি ও বিদেশিও রয়েছে।
এর আগে হামজা ব্রিগেডের তরফ থেকে জঙ্গিদের জন্য অস্ত্র কেনা, তৈরি, প্রশিক্ষণের জন্য তারা অর্থ দিয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জনের মাধ্যমে তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন দিক থেকে তারা অর্থ পেয়ে থাকে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ, জামায়াতনেতা মীর কাসেম আলী দেশের পরিস্থিতি অস্থির করে ফেলতে চান। বিচারকাজ ঠেকানোর জন্য কাজ করছেন তিনি। রায় কার্যকর যাতে সরকার করতে না পারে, সে চেষ্টাও করছেন। মীর কাসেম বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী কর্মকা- করার জন্য অর্থায়ন করেছেন, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে সূত্র জানায়, মীর কাসেম জঙ্গিবাদী কর্মকা- করার জন্য অর্থায়ন করেছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি দেশে জঙ্গিহামলা করার জন্য অর্থায়ন করেছেন এমন কোনো প্রমাণ এখনো পর্যন্ত গোয়েন্দারা সুনির্দিষ্ট করে পাননি। তবে তার বিচারকাজ বানচাল করার জন্য লবিস্ট নিয়োগ করেছেন, এমন প্রমাণ পেয়েছেন। বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করেছেন, তাও জানতে পেরেছেন।
বিএনপির বিরুদ্ধে সরকারের অভিযোগ, বিএনপি জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। এ ধরনের কাজে বিএনপি কোনো ধরনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে কিনা, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সূত্র জানায়, বিএনপি দেশের পরিস্থিতি অস্থির করতে চাইছে।
গুলশান ও শোলাকিয়ার ঘটনায় বিএনপি কোনো ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে কিংবা অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া গেছে কিনা, জানতে চাইলে একটি বিশেষ সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান জঙ্গিবাদের জন্য অর্থায়ন করেছেন বলে কোনো প্রমাণ এখনো মেলেনি। তবে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্পষ্ট করে কিছু বলা যাবে না। বিএনপি দলীয়ভাবে অর্থায়ন করেনি। কিন্তু তাদের কেউ করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তার কাছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে বলা হয়েছে, গুলশানের ঘটনায় তারেক রহমানের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তিনি পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন, এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওই সূত্র জানায়, এ ধরনের তথ্য কারও কারও কাছে থাকতে পারে, তবে আমরা এখনো পর্যন্ত এ ধরনের কোনো প্রমাণ পাইনি। ঘটনার তদন্ত শেষ হোক। সবারই নাম বের হয়ে আসবে। তিনি যদি পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকেন, তাহলে বের করা হবে। এখনো পর্যন্ত প্রমাণ মেলেনি। সম্পাদনা : এম আলম
