দীপক চৌধুরী : ‘একজন মন্ত্রী বলে দিলেন আওয়ামী লীগের লোকদের চাকরি দিতে হবে, আওয়ামী লীগের লোক ছাড়া চাকরি দেওয়া যাবে নাÑ পত্রিকায়ও তা এসেছে’ উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু প্রশ্ন তোলেনÑ ‘শুধু কী আওয়ামী লীগের জন্য বাংলাদেশ?’ গতকাল সোমবার দৈনিক আমাদের অর্থনীতি কার্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন। এই সাবেক ছাত্রদল নেতা বলেন, এদেশে বারবার গণতন্ত্র উপেক্ষিত হয়েছে, মৌলিক অধিকার উপেক্ষিত হয়েছে। আর এত অনিয়ম-অন্যায়-অবিচার গত কয়েকবছর ধরে চলেছে যা অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙেছে।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমাদের পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা পানির প্রয়োজন। এই পানির কথা যখন বলবো ভারত এটা সহজভাবে নেবে না। সীমান্তে যখন আমাদের লোক মেরে ফেলে এর প্রতিবাদ করলে তারা সহজভাবে নেয় না। ভারতের জনগণ যেমন আছে, সেখানে আমলা আছে, স্বার্থান্বেষী ব্যবসায়ী আছে। একই নীতিতে সবকিছু মাপা ঠিক হবে না। সুতরাং ভারতবিরোধী বিএনপিÑ এটা ভাবার কোনো কারণ নেই।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে রাজনীতিটা করবে তারা প্রোপাগান্ডা চালাবে, সেই প্রোপাগান্ডাটা তাদের মতো করেই তারা পূরণ করবে। বিএনপি যদি ভারতবিরোধী হয় তাহলে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে খালেদা জিয়াকে ভারত সরকার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সেসময় তো ভারতে কংগ্রেস সরকার ছিল। আওয়ামী লীগ কিন্তু খালেদা জিয়ার ওই সফরে সেসময় খুশি হতে পারেনি। আমরা যদি ভারতবিদ্বেষী হই তাহলে আমরা ভারতে যাব কেন আর কেনইবা তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানালে আমাদের প্রতিনিধি দল সেখানে যায়। বিএনপি চেয়ারপারসনের এ উপদেষ্টা বলেন, রাজনীতিতে কিছু বিষয় থাকে যে, ভারতবিরোধী প্রোপাগান্ডা বিএনপির রাজনীতিতে কতটা পক্ষে না বিপক্ষে নিয়ে যাবেÑ এ আলোচনাটা থাকতে হবে। নির্বাচনেই প্রমাণ হবে বিএনপির প্রোপাগান্ডাটা সফল না ব্যর্থ। নির্বাচন না হলে এটাতো প্রমাণ করা যাবে না। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তিনবার বিএনপি সরকার গঠন করেছে, হয় ১১৬ সিটে বিরোধী দল আর না হলে সরকারÑ এ মন্তব্য করে দুদু বলেন, অর্থাৎ জনগণ বিএনপিকে ফেলে দেয়নি। কৌশলগত রাজনীতিতে কংগ্রেস তার দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী চলতে পারে ও বর্তমান মোদি সরকার তার দেশের স্বার্থের দৃষ্টিভঙ্গিতে চলতে পারে। আমার দেশে পানি দেবে না। আমার রাস্তা তারা ব্যবহার করবে, আমার দেশে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াবে, এটা আমি মনে করি না; সেই সরকার স্টেটিজিক্যালি রং। সে তো চাইবে। আমি আমার দেশের স্বার্থকে সংরক্ষিত করতে পারছি কিনা।

দুদু বলেন, সরকার পানি আনতে পারছে না। ব্যবসায়িক ঘাটতি অভাবনীয়, সীমান্তে মানুষকে রক্ষা করতে পারছে না। এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের সরকারের। সেক্ষেত্রে আমি মনে করি বিএনপির স্টেটিজি সঠিক।

ভারত সাম্প্রদায়িক একটা দলের কব্জায়Ñ এ মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা আমাদের সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ উঠিয়ে দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার দিকে গেছি। আর বিজেপি ৭০/৮০ বছরে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিতে ঢুকে পড়েছে। অর্থাৎ তারা কংগ্রেসে নয়, তারা (বিজেপি) ইন্ডিয়াকে হিন্দু জামায়াত শাসন করছে। আর আমরা যদি উল্টাটা বলি আমরা পাকিস্তান ভেঙে ধর্মনিরপেক্ষতার দিকে এসেছি। আমরা ইন্ডিয়ার ভোট ও রাজনীতি থেকে পিছিয়ে থাকতে পারি কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে তাদের চেয়ে আমরা অনেক এগিয়ে আছি।