আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পানির জন্য ফিলিস্তিনের মানুষের হাহাকার ও সংগ্রাম এবং বিপরীতে ইসরায়েলিদের শোষণ-বঞ্চনাপূর্ণ মনোভাব নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিস্ট। ফিলিস্তিনের ভূগর্ভে সমুদ্র সমান পানি থাকার পরও যথাযথ প্রযুক্তির ব্যবহার না থাকা এবং দেশটির প্রতি ইসরায়েলের বঞ্চনা ও শোষণের মনোভাবকেই এ সংকটের জন্য দায়ী করা হয় ওই প্রতিবেদনে।
একসময় ইসরায়েলিরা তাদের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক সংরক্ষণাগার দ্য সী অব গ্যালিলির পানিসীমার ওপর নিজেদের প্রভাব জারি রাখতো। দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগ পর্যন্ত এ সংরক্ষণাগারের পানি ‘রেড লাইন’ থেকে মাত্র ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। রেড লাইন হলো সে পয়েন্ট যেখানে ইসরায়েল বাস্তুসংস্থানগত ক্ষতি এড়াতে পানি শোধনের কাজ বন্ধ করে দেয়। ইসরায়েলের বেশিরভাগ পানি কৃত্রিম উপায়ে উৎপাদিত হওয়ার কারণে তা এখনও জন-উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে পারেনি। ইসরায়েলের এক তৃতীয়াংশ পানি আসে ডিস্যালাইনেশন প্ল্যান্টস বা নির্লবণীকরণ প্রক্রিয়া থেকে। আর এ প্রযুক্তি এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তিগুলোর একটি। কৃষকরা সেচের জন্য শোধনকৃত পানির ওপর নির্ভর করে। নষ্ট হয়ে যাওয়া পানির ৮৬ শতাংশকে আবারও ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে সক্ষম হয় ইসরায়েল। যা বিশ্বের যে কোনও জায়গা থেকে সর্বোচ্চ পরিমাণ। আর স্পেন ২০ শতাংশ পানি পুনর্ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে পারে। সেদিক থেকে স্পেনের অবস্থান দ্বিতীয়। ১৯৬৭ সালে ইসরায়েলের দখলে যাওয়া ফিলিস্তিনি এলাকাগুলোর ভূগর্ভে এ ‘মাউন্টেন অ্যাকুইফার’ ব্যবস্থা রাখা আছে। ১৯৯৫ সালে অসলো চুক্তি অনুযায়ী, ওই অ্যাকুইফার থেকে উৎপন্ন পানির ৮০ ভাগ ইসরায়েলের, আর বাকি পানি ফিলিস্তিনিদের বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশে ফিলিস্তিনিদের প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১০০ লিটার পানি সরবরাহের কথা বলা হলেও তারা প্রতিদিন গড়ে ৭৩ লিটার পানি পান।