শিশু রাকিব হত্যার এক বছর কেমন আছে রাকিবের পরিবার?
শরীফা খাতুন শিউলী, খুলনা : খুলনার শিশু রাকিবের কথা সবার মনে আছে নিশ্চয়ই। মোটর সাইকেলের গ্যারেজে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছিল এই শিশু শ্রমিককে। মাত্র ১০ কার্যদিবসে হত্যাকা-ের রায়ে দুই আসামির ফাঁসি ও একজনকে খালাস দিয়েছিলেন আদালত। আজ বুধবার রাকিব হত্যার এক বছর। কেমন আছে রাকিবের পরিবার। এমন খবর জানতে মঙ্গলবার রাকিবের টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোডের ভাড়া বাসায় গেলে দেখা যায় এখনও মায়ের বেশিভাগ সময় কাটে সন্তানের ছবি দেখে। পাশে ভাইকে খুঁজে ফেরার প্রাণান্ত চেষ্টা ছোট বোন রিমির।
রাকিবের মা লাকি বেগম জানান, ফাঁসির আদেশ হওয়া শরীফের মা বিউটি বেগম খালাস পাওয়ার পর থেকে তারা আতঙ্কিত রয়েছেন। বিউটি বেগম মাঝে মাঝে লোক পাঠায় ৫ কাঠা জমির বিনিময়ে মামলা তুলে নিতে। কিন্তু সন্তানের বিনিময়ে কিছুই চান না রাকিবের মা-বাবা। তারা শুধু সন্তান হত্যার বিচার চান।
রাকিবের বাবা নুরু আলম জানান, সন্তান হারানোর পর পাওয়া রিকশাটি এখন তার পরিবারের একমাত্র সম্বল। রিকশা চলাতে চালাতে যখনই নগরীর টুটপাড়া কবরখানা সড়ক দিয়ে চলাচল করেন তখনই বুকের মধ্যে হাহাকার করে উঠে।
তিনি আরও জানান, রাকিবের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে টুটপাড়া জামে মসজিদে মিলাদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বোন রিমি বলে, ভাইয়া ছাড়া থাকতে খুব কষ্ট হয়। এখন আর কোন কিছুতে মজা পাই না। বাদীপক্ষের আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি আলোচিত রাকিব হত্যা মামলার পেপার বুক প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু এখনও কললিস্টে (কার্যতালিকা) আসেনি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৌহিদুর রহমান তুষার বলেন, ফাঁসির আদেশ হওয়া শরীফ ও মিন্টু মিয়া বর্তমানে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বিকেলে নগরীর টুটপাড়া কবরখানা মোড়স্থ শরীফ মোটরসের মালিক শরীফ মোটরসাইকেলে হাওয়া দেয়া কম্প্রেসার মেশিন দিয়ে শিশু রাকিবের পায়ুপথে হাওয়া ঢুকিয়ে তাকে হত্যা করে। ঘটনায় পরদিন রাকিবের বাদী হয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত শরীফ, শরীফের মা বিউটি বেগম ও চাচা মিন্টু খানের বিরুদ্ধে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা