মোহাম্মদ রবিউল্লাহ : কাশ্মীরে অব্যাহত সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনায় মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক নোয়াম চমস্কি সহ একাধিক লেখক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী এক বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে ভারত সরকারের কাছে এ ধরনের নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। গত ২৮ জুলাই এক বিবৃতিতে তারা বলেন, কাশ্মীরে সহিংসতায় এই পর্যন্ত প্রায় ৬০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। শিশু ও তরুণ ছাড়াও সাড়ে ৩ হাজার বেসামরিক নাগরিক মারাত্মক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নতুন করে কাশ্মীরে এই সহিংসতা শুরু হয়েছে কাশ্মীরের ২১ বছরের তরুণ বিদ্রোহী কমান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর মধ্যদিয়ে।
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, কাশ্মীরে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র প্রতিবাদীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। ছররা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস মেরে আহত করেছে বেসামরিক নাগরিকদের। কাশ্মীরে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। কিছু দিন সংবাদপত্র প্রকাশনাও বন্ধ থাকে। তিন দশক ধরে চলা কাশ্মীর সংকটের মধ্যে ১৯৯০ সালের পর সর্বশেষ এই মানবিক সংকটে পড়েছে কাশ্মীর।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ২০০৮ থেকে ২০১০ পর্যন্ত তিনটি রক্তক্ষয়ী সহিংসতা সংগঠিত হয়েছে কাশ্মীরে। জাতিসংঘের প্রস্তাবনা অনুযায়ী ১৯৪৮ সালে ভারতীয় পার্লামেন্টে কাশ্মীরকে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার দেওয়ার গ্যারান্টিও দেওয়া হয়েছিল। বিবৃতিতে তারা ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর পূর্বপরিকল্পিত সহিংসতার দ্রুত সমাপ্তি চেয়ে বলেন, কাশ্মীরের বেসামরিক নাগরিকদের উপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করতে হবে। ভারতের সরকারকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে আলোচনায় বসার দাবি জানান তারা।
এছাড়া বিবৃতিতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ও মানবাধিকার সংস্থার প্রতি কাশ্মীরে সহিংসতা বন্ধের নিন্দা ও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে কাশ্মীরে যে যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে তা বন্ধে এ ধরনের সংগঠগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক নোয়াম চমস্কি ছাড়াও নিউইয়র্ক বসবাসকারী কাশ্মীরের লেখক ও সাংবাদিক বাসারাত পির, বিবিসির সাংবাদিক ও লেখক মির্জা ওয়াহিদ, ব্রিটেনের ইউনির্ভাসিটি অব ওয়েস্ট মিন্টিস্টারের ভারতীয় ঔপন্যাসিক নিতাশা কাউল, পাকিস্তানের ইংরেজি লেখিকা ও ঔপন্যাসিক কামিলা শামসি, গিলিয়ান স্লোভো, মিনা কান্দাস্বামী, মাদুশ্রী মুখার্জীসহ ৮৫০ জন স্বাক্ষর করেন। সম্পাদনা : রাশিদ রিয়াজ