তিন দশকের রাজনৈতিক জীবনে তার চিন্তাধারা-জীবন দর্শনেও উত্তরণ ঘটেছে। শুরুটা ছিল পাকিস্তান আন্দোলনের ছাত্র-কর্মী হিসেবে। তার মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষ ঘটে ১৯৩৬ সালের দিকে।
‘অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘চোখের চিকিৎসার পর মাদারীপুরে ফিরে এলাম, কোনো কাজ নেই। লেখাপড়া নেই, খেলাধুলা নেই, শুধু একটা মাত্র কাজ, বিকালে সভায় যাওয়া। তখন স্বদেশি আন্দোলনের যুগ। মাদারীপুরের পূর্ণ দাস তখন ইংরেজের আতঙ্ক।
স্বদেশি আন্দোলন তখন মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জের ঘরে ঘরে। আমার মনে হতো, মাদারীপুরে সুভাষ বোসের দলই শক্তিশালী ছিল। পনের-ষোল বছরের ছেলেদের স্বদেশিরা দলে বেড়াত। আমাকে রোজ সভায় বসে থাকতে দেখে আমার উপর কিছু যুবকের নজর পড়ল। ইংরেজদের বিরুদ্ধেও আমার মনে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হলো। ইংরেজদের এদেশের থাকার অধিকার নেই।
স্বাধীনতা আনতে হবে। আমিও সুভাষ বাবুর ভক্ত হতে শুরু করলাম। আর স্বদেশি আন্দোলনের লোকদের সঙ্গে মেলামেশা করতাম।’ ১৯৩৯ সালে কলকাতায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে দেখা করেন। এবং মুসলিম লীগের সঙ্গে যুক্ত হন। কিন্তু সে সময়ও মুসলিম লীগের মধ্যে উদার-নৈতিক ও কিছুটা প্রগতিমুখী যে প্রবণতার অংশ ছিল, বঙ্গবন্ধু ছিলেন সেই আবুল হাশেম-সোহরাওয়ার্দীর অনুগামী।
লেখক : কলামিস্ট / সম্পাদনা : জব্বার হোসেন