প্রয়োজন পুনর্বাসন ও রোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি শুক্রবার বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। বন্যা প্লাবিত এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।
পদ্মা নদীর পানি হ্রাস অব্যাহত থাকায় নদী সংলগ্ন রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি শুরু হয়েছে যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এদিকে রাজধানী ঢাকার আশপাশের বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও শীতালক্ষ্যা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। বালু নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা শহরের পূর্ব পাশে বালু নদীর সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে। শরীয়তপুরে বন্যার পানিতে ৯০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গ্রামগুলোর ১১০টি বিদ্যালয়ের মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢোকায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া বন্যার কারণে জেলার তিনটি উপজেলার ৩৬৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এদিকে বন্যার কারণে রাজবাড়ীর সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলার ১৮৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে ‘বন্যাদুর্গত এলাকার একটি মানুষও না খেয়ে মারা যাবে না, কষ্ট পাবে না’Ñ সরকারের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ১৬টি জেলার ৫৯টি উপজেলার বানভাসি মানুষ চরম অনিশ্চয়তার ভিতর দিয়ে দিন কাটাচ্ছে।
বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ তৎপরতা তেমন শুরু হয়নি। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও এনজিওকে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এলাকাভিত্তিক কিছু সংগঠন ত্রাণ নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ালেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বর্তমানে বন্যাদুর্গত মানুষের আশ্রয়, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে দুর্বিষহ দিন পার করছে। এছাড়াও পানিবাহিত নানা রোগে বিপর্যস্ত বানভাসীরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন জানান, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা প্লাবিত এলাকা থেকে পানি নামছে। ফলে ওইসব বন্যাকবলিত এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। তিনি জানান, তিন দিন ধরে পদ্মা নদীর পানি হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। ফলে নদী তীরবর্তী জেলাগুলোর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি শুরু হয়েছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন আশা প্রকাশ করেন, উজানে ভারী বৃষ্টিপাত না থাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকবে। তিনি জানান, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতালক্ষ্যা নদীর উজানে ব্রহ্মপুত্র ও ধলেশ্বরীর পানি হ্রাস অব্যাহত থাকায় এসব নদীর পানিও হ্রাস অব্যাহত থাকবে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, পদ্মা ও সুরমা-কুশিয়ারা নদ-নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এসব নদ-নদীর পানি হ্রাস অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া গঙ্গা নদী স্থিতিশীল রয়েছে এবং তা আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে।
আগামী ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদী সংলগ্ন জামালপুর, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকবে। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা