দীপক চৌধুরী : আমরা সবাই জানি, বঙ্গবন্ধু তার ৭ মার্চের ভাষণে একইসঙ্গে স্বাধীনতা ও মুক্তির কথা বলেছিলেন। ২৫ মার্চে অপারেশন সার্চলাইটে ঢাকা থেকে শুরু হয় নির্বিচার গণহত্যা। একাত্তরের মার্চ মাসজুড়ে বিশ্বের সংবাদমাধ্যমগুলোর একটা বড় জায়গা দখল করে রেখেছিল বাংলাদেশ। প্রতিদিনই বাংলাদেশ নিয়ে সংবাদ হতো, বাংলাদেশ পরিস্থিতির বিশেষণ হতো বিশ্বের প্রথম সারির সব সংবাদপত্রে। কিন্তু সেই ‘বাংলাদেশ’ নামটির নামকরণ করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুই। কিন্তু তরুণ প্রজন্ম কি জানে এ তথ্য? সম্প্রতি এক আলোচনায় এই প্রশ্ন তুলেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর পৃষ্ঠা ২৯৭ থেকে জানা যায়Ñ
১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর আয়োজিত এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পূর্ব বাংলার নামকরণ করেন ‘বাংলাদেশ’। তিনি বলেন, ‘একসময় এ দেশের বুক হইতে, মানচিত্রের পৃষ্ঠা হইতে ‘বাংলা’ কথাটির সর্বশেষ চিহ্নটুকুও চিরতরে মুছিয়া ফেলার চেষ্টা করা হইয়াছে। … একমাত্র ‘বঙ্গোপসাগর’ ছাড়া আর কোনো কিছুর নামের সঙ্গে ‘বাংলা’ কথাটির অস্তিত্ব খুঁজিয়া পাওয়া যায় নাই। … জনগণের পক্ষ হইতে আমি ঘোষণা করিতেছিÑ আজ হইতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশটির নাম পূর্ব পাকিস্তানের পরিবর্তে শুধুমাত্র বাংলাদেশ।’
কিন্তু সেই স্বধীনতার স্থপতিকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে গড়ে তোলা তার স্বপ্নকে হত্যার চিন্তা করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা হত্যা করে শেখ মুজিব এবং তার পরিবারের সদস্যদের। সদ্য স্বাধীন জাতির জীবনে এক অপূরণীয় ক্ষতি নিয়ে আসে এই জঘন্য হত্যাকা-, তৈরি করে রাজনৈতিক শূন্যতা, ব্যাহত হয় গণতান্ত্রিক উন্নয়নের ধারা।
সম্পাদনা: এএইচসি