জাফর আহমদ : বিদায়ী ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ১০ ব্যাংককে জরিমানা গুনতে হচ্ছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক রয়েছে ৬টি এবং বেসরকারি ৪টি। রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকগুলো হলো- সোনালী, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), জনতা, বিডিবিএল, রূপালী এবং অগ্রণী। অন্য ব্যাংকগুলো হলো- বেসরকারি খাতের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং বিদেশি মালিকানাধীন ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি বাণিজ্যিক ব্যাংককে তাদের বিতরণ করা মোট ঋণের ২ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ করার নির্দেশনা আছে। যে সব ব্যাংক নির্দেশ অনুযায়ী ঋণ বিতরণ করতে ব্যর্থ হবে এবং যে পরিমাণ ঋণ বিতরণে ব্যর্থ হবে সে পরিমাণ টাকা জরিমানা করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জমা টাকা থেকে এ টাকা কেটে রাখা হবে।
তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে মোট ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। বিদায়ী বছরে ১০ বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণ বিতরণ করতে পারলেও তারা লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃষিঋণ বিতরণে ব্যর্থ হয়। এ সব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৭৪২ কোটি ১৫ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ কম করছে। এর মধ্যে ৬টি সরকারি ব্যাংক কম বিতরণ করেছে ৬০২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আর বাকি ৪টি ব্যাংক ১৩৯ কোটি ৭৭ লাখ কম ঋণ বিতরণ করছে।
তথ্য অনুযায়ী, এ বছর বেসরকারি ইউনিয়ন ব্যাংকের কাছে থেকে ৮৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ; মধুমতি ব্যাংক থেকে ১৮ কোটি টাকা ; এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের কাছে থেকে ৪২ কোটি ২ লাখ টাকা এবং বিদেশি মালিকানাধীন ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের কাছ থেকে কেটে রাখা হবে ৫ কোটি টাকা।
গত কয়েক বছর কৃষিঋণ বিতরণে ব্যর্থ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে টাকা কেটে রাখছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে যখন ব্যর্থ ঋণের সমপরিমাণ ঋণ বিতরণ করেছে সেই টাকা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ফেরত দিচ্ছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কেটে রাখা টাকার কোনো সুদ দেওয়া হচ্ছিলো না বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। তবে এ বছর যে সব ব্যাংকের কাছ থেকে টাকা কেটে রাখা হবে এ টাকা ফেরত দিবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, পল্লী অঞ্চলে অর্থের সরবরাহ বৃদ্ধি ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে তৎকালীন গর্ভনর ড. আতিউর রহমান প্রতিটি ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের ২ শতাংশ কৃষিঋণ হিসাবে বিতরণ করতে নির্দেশ দেয়। এ সব ঋণ বিতরণ যাতে নিশ্চিত হয় এ জন্য এ টাকা কেটে রাখার এ নির্দেশনা। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম