ইসমাঈল হুসাইন ইমু : ধর্মীয় বয়ানে বেহেস্তের লোভ দেখিয়ে মগজ ধোলাইয়ের পর নতুনদের জঙ্গি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করাতো জঙ্গি জিয়াউল ও তামিম। সাম্প্রতিক সময়ের জঙ্গি হামলাগুলোর মাস্টার মাইন্ড বা ‘ড্রিম মার্চেন্ট’ হিসেবেও এই মেজর জিয়া ও তামিমের নাম রয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ধর্ম সম্পর্কে যাদের জ্ঞান কম এবং পারিবারিক ও সামাজিকসহ নানা কারণে যারা হতাশ এমন তরুণদেরই সবচেয়ে বেশি টার্গেট করতো তারা। জঙ্গিবাদের মূল হোতারা চরিত্রের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে পরবর্তী মিশনে নামে। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে যারা বাধ্যগত না হয়ে বিপরীতধর্মী প্রতিক্রিয়া দেখায় তাদের ছেড়ে অন্য কাউকে টার্গেট করা হয়।
এছাড়া তাদের বলা হতো ধর্মের সব বিধান না মানলেও চলবে। আর সেই কৌশল ও প্রক্রিয়া শেখানোর নামেই মূলত জঙ্গিবাদে জড়ানো হয় তরুণদের। ইসলামি খিলাফত প্রতিষ্ঠায় জিহাদ বা বিপ্লব ছাড়া বেহেস্তে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও মগজ ধোলাই করা হয় তাদের। প্রথমদিকে নামাজ, রোজা ও ভালো কাজের কথা বলে আকৃষ্ট করা হলেও পরে তারা এগুলোর চেয়ে জিহাদকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, মগজ ধোলাইয়ের এ পর্যায়ে তাদের মননে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, রক্তের তৃষ্ণা ছাড়া তাদের মানসিকতায় আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। তখনই তাকে দিয়ে ভিন্ন মতাদর্শের লোকদের হত্যাকা-ে জড়িয়ে ফেলা হয়।
গুলশান ও শোলাকিয়া হামলা, মাদারীপুরে কলেজ শিক্ষককে হত্যাচেষ্টা সর্বশেষ কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে নিহত ১৬ জঙ্গির দু-একজন ছাড়া সবাই উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাদের বেশিরভাগই ইংরেজি মাধ্যম ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছে।
ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ধর্ম-কর্ম সম্পর্কে কম জানে এমন তরুণদের টার্গেট করে মাস্টারমাইন্ডরা। ধর্মের বিভিন্ন ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মগজ ধোলাইয়ের কারণে এসব তরুণের মধ্যে আর নিজস্ব বোধ-বুদ্ধি কাজ করে না। তখনই তাদের হিজরত ও জিহাদের নামে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে জঙ্গি কর্মকা-ে সম্পৃক্ত করা হয়। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম