
রিজার্ভ চুরিতে আরসিবিসির সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চায় বাংলাদেশ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিপাইনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ-২ নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশন (আরসিবিসি)-এর সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চায় বাংলাদেশ। এ ব্যাপারে ফিলিপাইনের সিনেট ব্লু রিবন কমিটিকে আবারও তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
ফিলিপাইনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ জানিয়েছেন, ওই অর্থ চুরির ঘটনায় আরসিবিসি কি পরিমাণে যুক্ত রয়েছে, তা জানতে চায় বাংলাদেশ সরকার। তিনি বলেন, ‘এর আগের শুনানিতে আমরা আরসিবিসির অংশগ্রহণের বিষয়ে পূর্ণ ফলাফল পাইনি, কারণ তারা ফিলিপাইনের ব্যাংক গোপনীয়তার আইনকে সামনে তুলে আনছিল।’ বাংলাট্রিবিউন
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আগের শুনানিগুলোতে কেবল ব্যাংক ম্যানেজার দিগুইতোকেই সবার আক্রমণের লক্ষ্য করেছে। কিন্তু আমি মনে করি, আরসিবিসির কিছু লোকজন, ফিলরেম এবং উইলিয়াম গো এই চুরির সঙ্গে জড়িত রয়েছে।’ ফিলরেম এবং বাউতিস্তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার বলে মনে করেন তিনি। তাই ব্লু রিবন কমিটিকে তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রদূত গোমেজ আরও জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সিনেট কমিটির কাছে চিঠি লিখবে। এদিকে, রাষ্ট্রদূত জন গোমেজকে বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুয়ার্তে।
এ সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ বলেন, ‘আমরা খুবই আশাবাদী যে, ৮১ মিলিয়ন ডলারের পুরোটাই ফেরত পাব। কারণ প্রেসিডেন্টের (দুতের্তে) কাছ থেকে আমি প্রতিশ্রুতি পেয়েছি।’
সবশেষ খবর অনুযায়ী, চুরি যাওয়া রিজার্ভের মধ্যে এক কোটি ৮০ লাখ ডলারের হদিস পাওয়া গেছে, যার দেড় কোটি ডলার ফিলিপাইনের বিচার বিভাগের কাছে রয়েছে। সেই টাকা ফিরে পেতেই তৎপরতা চলছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা দেবপ্রসাদ দেবনাথ ও আব্দুর রব এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইনজীবী আজমালুল হোসাইন ম্যানিলা সফর করেছেন।
ইতোমধ্যে, অর্থ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের ব্যাংক আরসিবিসি-কে ১০০ কোটি পেসো জরিমানা করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৬৭ কোটি ২১ লাখ টাকারও বেশি। কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এককভাবে এতো বেশি পরিমাণ জরিমানা করার ঘটনা ফিলিপাইনে এটাই প্রথম বলে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম হ্যাকড করে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকাররা ৯৫১ মিলিয়ন ডলার চুরির চেষ্টা করে। পরে বেশ কিছু পেমেন্ট বন্ধ করে দিয়ে বেশিরভাগ অর্থচুরি ঠেকানো গেলেও ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইনে স্থানান্তরে সক্ষম হন হ্যাকাররা। ওই অর্থ ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনকে (আরসিবিসি)-এর জুপিটার ব্রাঞ্চের চারটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে ওই অর্থ ফিলিপিনো পেসোতে রূপান্তরের পর দুটি ক্যাসিনোতে পাঠানো হয়। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা
