বিশ্বজিৎ দত্ত : উচ্চ আদালতে আয়করের মামলায় হারার পর উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক বকেয়া আয়করের অর্ধেক প্রায় ২০০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। বাকি টাকা কয়েকটি কিস্তিতে পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছেন কর কমিশনার হাবিবুর রহমান আকন্দ। তিনি বলেন, ব্র্যাকের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান আয়করমুক্ত। যেসব প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত তাদের আয়ের উপরই আয়কর ধার্য হয়েছে। আড়ংসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও তাদের ব্যাংকসুদের উপর আয়কর রয়েছে।
তিনি বলেন, এ মামলা আয়কর আদায়ের ইতিহাসে একটি মাইল ফলক। কারণ হাইকোর্টে জাতীয় রাজস্ববোর্ডের প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার মামলা আটকে আছে। ব্র্যাকের এ মামলার রায়ের পর অন্য মামলাগুলোরও পথ সুগম হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যানের বিশেষ তত্ত্বাবধান ও আয়কর কর্মকর্তাদের কোর্টে নিয়মিত হাজিরা ও যথাযথ প্রমাণ দেওয়ার ফলেই মামলাটির ফলাফল সরকারের পক্ষে গিয়েছে বলে তিনি মনে করেন। গত বুধবার ব্র্যাককে আয়কর হিসেবে ৪০৪ কোটি ২০ লাখ ৫৮ হাজার ৮৯২ টাকা পরিশোধ করতে নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ। এর আগে হাইকোর্টের রায়ে ব্র্যাককে আয়কর থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। পরে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বিভিন্ন সময় ডেপুটি কমিশনার অব ট্যাক্সেস ব্রাকের জন্য ১৯৯৩-৯৪, ৯৪-৯৫, ৯৫-৯৬, ৯৬-৯৭, ২০০৫-০৬, ০৬-০৭, ০৭-০৮, ০৮-০৯, ০৯-১০, ১০-১১ ও ১১-১২ করবর্ষের জন্য আয়কর নির্ধারণ করেন। তখন ব্র্যাক অ্যাপিলেট কমিশনারের কাছে আপিল করে। অ্যাপিলেট কমিশনার উপকর কমিশনারের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। পরে এর বিরুদ্ধে ব্র্যাক ট্যাক্সেস অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে। ট্রাইব্যুনাল ৪০৪ কোটি ২০ লাখ ৫৮ হাজার ৮৯২ টাকা আয়কর নির্ধারণ করে দেন।
সর্বশেষ ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্র্যাক হাইকোর্টে পৃথক ১১টি ইনকাম ট্যাক্স রেফারেন্স আবেদন করে। শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, ব্র্যাক ওই আয়কর অব্যাহতি পাওয়ার যোগ্য। তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কমিশনার অব ট্যাক্সেস গত বছর ১১টি লিভ টু আপিল দায়ের করে। শুনানি শেষে একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ ওই আবেদন মঞ্জুর করলে পরে নিয়মিত আপিল দায়ের করা হয়। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি