ইয়াছিন রানা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেই আজ অনেক বছর। অনেক বন্ধু শুভাকাক্সিক্ষ আর ভক্ত ছিল বঙ্গবন্ধুর। ছিল অনেক স্মৃতি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এখনো তার ভক্ত অনুসারীরা তার স্মৃতিকথা স্বরণ করিয়ে আলোড়িত করেন বঙ্গবন্ধু প্রেমীদের।
তার পরেও সময়ের পালাক্রমে কমে যাচ্ছে এমন সব মানুষ যারা বহন করছিলেন বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি। সে কারণেই বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিগুলো হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির অতল গহ্বরে। কিন্তু প্রকৃতির পরিবর্তনশীল ধারায় আজও যেন বঙ্গবন্ধুর ধানম-ির ৩২ নম্বরের বাড়িটি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বুকে জড়িয়ে অমলিন করে রেখেছে। কারণ বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত স্থান এবং তার সম্পর্কে জানবার স্থান এখন এই একটাই। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর থেকে এই বাড়িটি এখন পর্যন্ত অনেক সুন্দর করে স্ব-যতেœ রাখা হয়েছে। যারা জাদুঘর দেখতে যান তারা এখনো দেখতে পান- ঘাতকের সেই বুলেট, সেই রক্তের চিহ্ন। এছাড়া সুন্দর করে সাজানো রয়েছে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সবার ব্যবহৃত জিনিসপত্র।
বঙ্গবন্ধুর এই স্মৃতি বিজড়িত স্থানে তার প্রেমীরা নিয়মিতই ঘুরতে আসেন বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত শেষ বিদায়ের স্থানে। এছাড়া অনেকে ব্যস্ততার কারণে নিয়মিত আসতে না পারলেও বছরের আগস্ট মাসে একবার আসেন।
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত স্থানে এসে অনেকেই নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে কান্না করেন। বাড়ির ভিজিটর গাইডদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেকেই ঘুরতে এসে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করে অজ্ঞানও হয়ে যান।
ভিজিটর গাইডদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, বন্ধ ও বিশেষ দিনে ভিজিটরের সংখ্যা থাকে দুই থেকে তিন হাজার আর অন্য দিনে তিন থেকে চার’শ মানুষ ঘুরতে আসেন এখানে। যারা এখানে ঘুরতে আসেন তারা আমাদের কাছে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে চান, আমরাও তাদের বিস্তারিত জানাবার চেষ্টা করি। কিন্তু অনেকের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানার আগ্রহ এত বেশি যে, আমরা তাদের পরিতৃপ্ত করতে পারি না।
গাইডরা বলেন, আমাদের পরম সৌভাগ্য আমরা এখানে কাজ করি। কারণ অনেক মানুষ আসেন যারা বঙ্গবন্ধুকে জীবনে একবার দেখেছেন কিন্তু বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাদের এত বেশি পরিমাণ ভালোবাসা যা অবাক করার মতো। আমরা এসব ব্যক্তির কাছ থেকে তাদের স্মৃতি শুনে এ যুগের ছেলে-মেয়েদের শুনাই, এটা খুব ভালো লাগে।
এছাড়া ডেসব বিদেশি বঙ্গবন্ধু জাদুঘর দেখতে আসেন তারাও আশ্চর্য হয়ে যান যে- এমন একজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তবুও বঙ্গবন্ধুকে জানার এবং স্বরণ করার জন্য বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত স্থান একটাই। তাই যুগের পর যুগ সকল মানুষের স্মৃতির পাতায় অমলিন হয়ে থাকবে বঙ্গবন্ধুর ধানম-ি ৩২ নম্বরের এই বাড়িটি। সম্পাদনা: আ. হাকিম