জঙ্গি হামলায় নিহত চার পুলিশ সদস্যের পরিবারকে অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে পুলিশ কর্মকর্তারা শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে
আজাদ হোসেন সুমন : গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশের চার সদস্যের বীরত্বগাঁথা অবদানের কথা ভুলবে না পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। তাদের হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করার ব্রত নিয়ে জঙ্গিবাদ নির্মূলে সচেষ্ট হওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। গতকাল বুধবার পুলিশ সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় নিহত চার পুলিশ সদস্যের পরিবারকে অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে আইজিপিসহ পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। নিহত চার পুলিশ সদস্যের পরিবারকে ৯০ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে পুলিশ সদর দফতর দিচ্ছে ৭০ লাখ টাকা এবং ২০ লাখ টাকা দিয়েছে বেসরকারি মধুমতি ব্যাংক। ডিএমপি দিবে এক কোটি ১০ লাখ আর পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ২০ লাখ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া এ চার পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে আরও অনুদান দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে।
বুধবার পুলিশ সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে নিহত ৪ পুলিশ সদস্যের পরিবারের হাতে ৯০ লাখ টাকা নগদ ও সঞ্চয়পত্র আকারে তুলে দেওয়া হয়। পরিবারগুলো হচ্ছে- গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি ও রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় নিহত ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ রবিউল করিম, বনানী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন, শোলাকিয়ায় নিহত কনস্টেবল জহিরুল ইসলাম তপু ও আনসারুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা ডিএমপি কশিনার আসাদুজ্জামান বলেন, ডিএমপি পুলিশের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে আরও ১কোটি ১০ লাখ টাকা এবং পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ২০ লাখ টাকা দেওয়া হবে।
অনুদানের ৯০ লাখ টাকার মধ্যে রবিউল করিমের মা করিমন নেসাকে ৫ লাখ টাকা ও তার স্ত্রী সালমা আক্তারকে ১৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। সালাহ্উদ্দিনের স্ত্রী রেমকিন খানকে দেওয়া হয় ২০ লাখ টাকা। শোলাকিয়া কনস্টেবল জহিরুলের মা জোবেদা খাতুনকে ১৫ লাখ টাকা, কনস্টেবল আনসারুল ইসলামের মা রাবেয়া খাতুন ও স্ত্রী লুনা আক্তারকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা করে মোট ১৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। অনুদানের মধ্যে এক লাখ টাকা নগদ এবং ৬৯ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্র আকারে দেওয়া হবে। এছাড়া বেসরকারি মধুমতি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিহত চার পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে মোট ২০ লাখ টাকা অর্থ সহায়তা দেয়। অনুষ্ঠানে নিহত পুলিশ পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, নিহত সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলামের ভাই সামুজ্জামান ও বনানী থানার ওসি সালাহ্উদ্দিনের স্ত্রী রেমকিম।
আইজিপি একেএম শহীদুল হক বলেন, এদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে পুলিশ জঙ্গিবাদের মোকােিবলা করছে এবং সেটা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে আইজিপি বলেন, নিহত চার শহীদের নামে চারটি সড়কের নামকরণ করা হবে। আমাদের এই শোকে আমরা মূহ্যমান হবো না বরং শোককে শক্তিতে পরিণত করে জঙ্গি নির্মূলে কাজ করে যাব।
ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান বলেন, নিহত পুলিশ সদস্যদের পাশে ঢাকা মহানগর পুলিশ থাকবে। নিহত চার জন নিজের জীবন দিয়ে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তিকে একধাপ উপরে তুলে দিয়ে গেছেন। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম