ব্যক্তি সচেতনতাই পরিবেশ সংরক্ষণের অন্যতম পথ
ড. তরুণ কান্তি শিকদার
কেনাকাটায় সতর্কতা পাল্টে দিতে পারে পরিবেশ সংরক্ষণের ধারণা; কেনাকাটায় সাধারণত আমাদের আগ্রহ নতুনের প্রতি আর যদি সরকারি কেনাকাটা হয় তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই। অধিকাংশ কর্মকর্তাই নতুন কিছু করতে চান। এটি একটি ভালো দিক। তবে অফিসের অনেক পুরাতন আসবাবপত্র সামান্য যতেœর জন্য নষ্ট হয়ে যায় সেদিকে অনেকেই নজর দেন না। এমনকি হয়তো অতি সম্প্রতি (এক বা দুই মাস) পূর্বে ক্রয় করা অত্যন্ত ভালো চেয়ার-টেবিল ফেলে দিয়ে নতুন কর্মকর্তা আবার নতুন ক্রয় করেন। এমন নজির একেবারে কম নয়। এভাবে উচ্চবিত্ত পরিবারে অনেক দামী ইলেকেট্রনিক্সও নিত্য পরিবর্তন হয় মডেলের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে। এইসব বিষয়ে আমরা মোটেই ব্যবহার সচেতন নই বা পরিবেশ সচেতন নই।
পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে যারা নিত্য গলাবাজি করেন তাদের মধ্যেও এ ধরনের ছোট বিষয়গুলো তুলে ধরতে পারিনি। যেকোনো ইলেকট্রনিক্স দ্রব্যাদি, প্লাস্টিক, বাচ্চাদের খেলনা জাতীয় দ্রব্যের ধ্বংসের ফলে প্রচুর পরিমাণে পরিবেশ দূষণ হয়। এমনই একটি পরিবেশ দূষণকারী পদার্থ চ০চ’ং (চবৎংরংঃধহপব ঙৎমধহরপ চড়ষষঁঃধহঃং) যা আমাদের নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্য থেকে পরিবেশ আসে। এসব দূষক ৪০ থেকে শতবর্ষ পর্যন্ত বায়ুতে দূষণ সৃষ্টি করে দূরারোগ্য ক্যান্সারসহ নানাবিধ রোগের সৃষ্টি করে। এজন্য এসব দ্রব্যাদির পুণঃব্যবহার ও ব্যবহার উপযোগিতা কমিয়ে আনলে পরিবেশ কিছুটা দূষণমুক্ত থাকতে পারে। এছাড়া ধারণাগত কিছু মৌলিক পরিবর্তনের কথা মাথায় রাখলেও নিজেদের পরিবেশ আরও সুস্থ রাখা যায়। যেমন ইটভাটা ও ইট পোড়ানো নিয়ে আমাদের দেশে সকল পর্যায়ে একটা আন্দোলন রয়েছে। বিভিন্ন পরিবেশ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে খুব উচ্চকিত থাকেন। সরকার গত ২০১২ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন সংশোধন করেছেন। এ আইন আক্ষরিক অর্থে প্রতিপালন করতে গেলে বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থিত ইটভাটার অধিকাংশই বাতিল হয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের দেশে অবকাঠামো ও সড়ক উন্নয়নের একমাত্র উপাদান ইট এর বিকল্প নেই। আমরা তাহলে একটি বিকল্প চিন্তা করতে পারি। অন্তত স্কুল, কলেজ বা নিজ বাসভবনের চারপাশে ইটের প্রাচীর দিয়ে না ঘিরে গাছের আবরণ গড়ে তুলতে পারি। আমাদের দেশের বেড়কাটা, মেহেন্দি কাটা, ঝোপ রঙ্গনের মতো অনেক ফুল জাতীয় গাছ আছে। যা দিয়ে এ প্রাচীর গড়ে তোলা খুবই সম্ভব। শুধু প্রয়োজন ২/৩ বছর নিয়মিত যতœ ও সারের প্রয়োগ।
লেখক : কবি ও সাহিত্যিক
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন