ঋণ আদায়ের চেষ্টা উল্টো পরিহাসমূলক পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
ব্যাংক লোন, এই আর্থিক কার্যক্রম এখন খুব সহজ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরও সহজ হয়েছে ঋণ খেলাপি। ঋণ খেলাপি এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেটা আজ সমাজের সর্বস্তরের ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানে সুলভ কাজের মধ্যে একটি কাজ।
গত কয়েকবছরে ধারাবাহিকভাবে ঋণ খেলাপির মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে শুধু দুর্বল নয়Ñ অক্ষম করে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশে ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ করার যে সমস্যা তার বড় কারণ হচ্ছেÑ ঋণের বাজারের পরিস্থিতি। সরকারের ঋণ আদায়ের চেষ্টা উল্টো পরিহাসমূলক পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে জনগণ ট্যাক্স দিবে আর অন্যদিকে ব্যাংকের মাধ্যমে সেই ট্যাক্সের টাকা ‘ঋণ চুরি’র মাধ্যমে ভর্তুকির মধ্যে যাবে, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও তার দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করছে তা মনে হচ্ছে না। এমন অবস্থার জন্য ব্যাংকের কমিশন গঠন ও সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে একটি মধ্য মেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
অর্থমন্ত্রীও এ ব্যাপারে বারবার বলেছেন, বিভিন্ন সময় বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এর কোনো সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে আমরা হতাশ।
বড় বড় ঋণ খেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করা যায়, ফলে সামাজিকভাবে তারা হেনস্ত হবে বা বিব্রত হবে। এর মাধ্যমে কিছুটা হয়তো ফল পাওয়া যেতে পারে, তবে খুব বেশি লাভ হবে বলে মনে হয় না। রাজনৈতিক স্বদিচ্ছার ওপরও অনেকটা নির্ভর করে, এই সকল ব্যক্তিদের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় কিনা। সেই রাজনৈতিক স্বদিচ্ছার কোনো কার্যক্রম আমরা এখনও দেখতে পাইনি।
পরিচিতি : অর্থনীতিবিদ
মতামত গ্রহণ : শরিফুল ইসলাম
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন