শাহানুজ্জামান টিটু : গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের এক অনুষ্ঠানে বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটি নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার প্রতিবাদে ডাকা আলোচনা সভায় দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে কমিটি নিয়ে তাদের হতাশা ও কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতাদের নিয়ে সমালোচনার ঝড় তোলেন তারা। সমালোচনাকারীদের অভিযোগ, অনেক ত্যাগী নেতাকে বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। যোগ্যদের কমিটিতে মূল্যায়ন করার কথা বলে হলেও ঘোষিত কমিটিতে তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দল ওই সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকার কথাছিল দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের। কিন্তু তিনি অনুষ্ঠানে ছিলেন না। কেন্দ্রীয় কমিটির দুই নেতার সামনেই তারা তাদের ক্ষোভের কথা বলেন।
বিএনপির নতুন কমিটি ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান বলেন, কমিটি নিয়ে অনেকে কষ্টের কথা বলেছেন। সবার প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে সে কথা বলব না, অনেকেরই নাম নেই। আমি বলব, তাদের নাম থাকা উচিত ছিল। কারণ আন্দোলন-সংগ্রামে দীর্ঘ সময় তাদের দেখেছি। বর্তমান সময়কে বিএনপির জন্য সবচেয়ে কঠিন হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, এ সময়ে কমিটি গঠন করা ছিল আরও কঠিন। কারণ দল ধ্বংস করতে নানা তৎপরতা চলছে। এখন আক্ষেপ অভিযোগের সময় না, ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়। কথা দিচ্ছি সমন্বয়ের জন্য নিশ্চিতভাবে কথা বলব।
বিএনপির নতুন কমিটিতে প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদকের পদ পাওয়া এবিএম মোশারফ হোসেন বলেন, অনেক কথা শুনেছি। আমারও ক্ষোভ-অভিমান আছে। আমি মনে করি সেটা খুবই যৌক্তিক। বিএনপিতে কোটি কোটি কর্মী-সমর্থক থেকে কমিটি করা দুরূহ কাজ। কেউ কেউ বঞ্চিত হয়েছেন, লেখালেখি হচ্ছে, আলোচনা হচ্ছে, বিশ্বাস করি সমাধান হবে। মোশারফ বলেন, পদ পেয়েও কি কেউ শান্তিতে আছেন? কেউ কি গ্যারান্টি দিতে পারেন সালাউদ্দিন আহমেদ সুস্থমতো দেশে ফিরে আসতে পারবেন?
ঢাকার খিলগাঁও থানা বিএনপির সভাতি ইউনুস মৃধা বলেন, যারা রাজপথে সক্রিয় ছিল তাদের এবং কর্মীবাহিনী থেকে নেতৃত্ব সৃষ্টি করলে দল আরও শক্তিশালী হতো। শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব জাকির হোসেন বলেন, প্রধান অতিথি থাকলে আরও ক্ষোভের কথা বলতাম। কোন যোগ্যতায় বিএনপির কমিটিতে জায়গা পাওয়া যায়? কমিটিতে স্থান পাওয়াদের মধ্যে এক-এগারোর পর খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য কর্মসূচিতে কয়জন ছিলেন, প্রশ্ন রাখেন শিক্ষক নেতা জাকির।
পারভেজ আহমেদ বলেন, অনেক ক্ষোভ আছে, কষ্ট আছে, দুঃখ আছে। তবে রাজনীতি করতে গেলে হতাশা রাখা যাবে না। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য আবেদ রেজা বলেন, আমাকে নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হলেও আমি এ কমিটির কোনো পদেই নেই। এখন আমি বিএনপির একজন কর্মী, বিএনপির লাখ লাখ কর্মী, আমাদের দলই বড়। আমরা লড়াই সংগ্রামে আছি, থাকব, বেইমানি করব না। কর্মজীবী দলের সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন খান বলেন, সব পদ কেউ একা নিয়ে বসে থাকবেন- এটা হতে দেওয়া যাবে না। যারা পরিশ্রম করেছেন দলে তাদের পদ দেবেন। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম