![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)
উদ্বেগ কমে এসেছে বিদেশিদের
দীপক চৌধুরী : গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ১ জুলাইয়ের জঙ্গিহামলার পর বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কূটনীতিক ও কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তাদের মধ্যে সৃষ্ট হওয়া উদ্বেগ কমে এসেছে বলে সরকার ধারণা করছে। একাধিক কূটনীতিবিদ, সরকারের মন্ত্রী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে।
সেই উদ্বেগ উপশমে সরকার কূটনৈতিক এলাকাসহ বিভিন্নস্থানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার করেছে। বিদেশি দূত, ব্যবসায়ী নেতা ও সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে ‘নিরাপত্তা’ ইস্যুতে অনুষ্ঠিত কয়েকটি বৈঠকে বলা হয়Ñ বিদেশিরা চাইলে সরকারের পক্ষ থেকে আরও নিরাপত্তা দেওয়া হবে। বিদেশি কূটনীতিক ও উন্নয়ন-সহযোগীরা গুলশানের ঘটনার পর তাদের উৎকণ্ঠার কথা জানালেও এখন তারা মনে করছেন, সরকারের সর্বোচ্চ মহল বিদেশিদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন।
কূটনৈতিক সূত্রমতে, প্রায় এক সপ্তাহ আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠকে কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিচ্ছিদ্র করতে কিছু নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এসব বৈঠকে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিবিদ ও দূত উপস্থিত থেকে তাদের মতামত দিয়েছেন এবং সরকারের ভূমিকায় তারা অনেকেই আশ্বস্ত হওয়ার কথা প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্রুম বার্নিকাট বাংলাদেশ সফরে আসা এবং এ দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যেতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ ভ্রমণে মার্কিনিদের সতর্কতা জারি করা হয়নি। তবে স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হোকÑ এটা কোনোভাবেই চান না তারা। নিরাপত্তা ইস্যুতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট। তবে আরও নিরাপত্তার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
পোশাক উৎপাদন এবং রফতানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক যৌথ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন বার্নিকাট। রাজধানীতে বিজিএমইএ কার্যালয়ে আয়োজন করা হয়েছিল এ বৈঠক। নিরাপত্তা ইস্যুতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র খুশি কি নাÑ সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা সন্তুষ্ট। বৃহস্পতিবারেই
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সচিবালয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সাথে মতবিনিময় করেন।
ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সাংবাদিকদের বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ভারত সন্ত্রাসবিরোধী কাজে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর আগে গেল মাসে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীদ্বয়ের ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়Ñ সেখানেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি বলেন, পুরো ভারত বাংলাদেশের পাশে আছে। সংকটকালে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজু আবেসহ অনেক বিদেশি নেতা বাংলাদেশের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েকটি দেশ নিরাপত্তারক্ষীদের অস্ত্র ব্যবহার এবং রাষ্ট্রদূতের জন্য আর্মার্ড ভেহিকেল (বুলেট প্রুফ এবং বিস্ফোরক নিরোধক উন্নত প্রযুক্তির গাড়ির সর্বশেষ সংস্করণ) ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে। তবে জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী দূতাবাস অঙ্গনে নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থার বিধান থাকলেও তাদের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব স্বাগতিক দেশেরই। তবে সবধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা করতে সরকার চাইলেও বিদেশি বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টির ব্যাপারে চুপ।
গত মাসের শেষদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ব্যবসায় তেমন অ্যাফেক্ট হয়নি, ব্যবসা চলছে, ভালোভাবেই চলছে। ইনিশিয়ালি যেটা হয়েছিল তারা আমাদের দেশে আসা নিয়ে শঙ্কিত ছিল। এখন এই শঙ্কা নেই।’
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, নিরাপত্তা ইস্যু সরেজমিন দেখতে কয়েকটি দেশের প্রতিনিধি ঢাকায় আসছেন। অভয় পরিবেশ তৈরি করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে সরকার। কেবল কূটনীতিই নয়, সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ুক তা চায় সরকার। সম্পাদনা : আলাউদ্দিন
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)