আইএস ছাড়তে চেয়েছিল সেই ‘বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত’ ব্রিটিশ কিশোরী!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ব্রিটেন থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এ যোগ দেওয়া স্কুলছাত্রী খাদিজা সুলতানা মৃত্যুর আগে জঙ্গি সংগঠনটি ছাড়তে চেয়েছিল বলে দাবি করেছে তার পরিবার ও পারিবারিক আইনজীবী। পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন স্কুলের শিক্ষার্থী ১৭ বছর বয়সী খাদিজা স্কুলের ছুটি কাটানোর সময় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাজ্য থেকে সিরিয়ায় পালিয়ে যায়। তার সঙ্গে ছিল দুই বন্ধু শামীমা বেগম ও আমীরা আব্বাসী। সিরিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার সময় খাদিজার বয়স ছিল ১৬ বছর। আর শামীমা ও আমীরার বয়স ছিল ১৫ বছর। তুর্কি সীমান্ত দিয়ে সিরিয়ায় প্রবেশ করে তারা আইএস-এ যোগ দেয় বলে জানা গেছে।
ব্রিটিশ নাগরিক খাদিজা সুলতানাকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ‘বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত’ বলে উল্লেখ করা হলেও তার পারিবারিক আদিনিবাস বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে অবস্থিত, সে সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
খাদিজার পারিবারিক আইনজীবী তাসনিম আকুঞ্জি বিবিসির নিউজ নাইট অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘নিহত হবার আগে খাজিদা আইএস ছাড়তে চেয়েছিল।’ কয়েক সপ্তাহ আগেই রাক্কা এলাকায় খাদিজার নিহত হওয়ার খবর পেয়েছেন তারা, তবে নিরপেক্ষভাবে তার মৃত্যুর খবর যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানান।
ব্রিটিশ টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আইটিভি-কে খাদিজার বোন হালিমা খানম জানান, তার বোন খাদিজা যে আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় পালাবে সে ব্যাপারে তারা প্রায় নিশ্চিতই ছিল। তিনি বলেছেন, ‘আমরা চিন্তা করছিলাম এরকমই কিছু একটা ঘটবে।’ তবে আমরা ভেবেছিলাম কোনো একটা নিরাপদ স্থানে সে আছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, খাদিজা আইএস-এর কবল থেকে মুক্ত হওয়ার আগেই মারা গিয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে যে স্থানে অবস্থান করছিল, চলতি বছরের মে মাসে সেখানে বিমান হামলা চালানো হয়।
প্রেস অ্যাসেসিয়েশন জানায়, খাদিজার বিয়ে হয়েছিল এক সোমালি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে। বিমান হামলায় তার স্বামীও নিহত হয়।
খাদিজার মৃত্যুর খবরে তার পরিবার একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে বলে জানিয়েছেন তাসনিম আকুঞ্জি, ‘পরিবারের একজন সদস্যের মৃত্যুর খবরের চেয়ে খারাপ খবর আর কি হতে পারে, তবে খাদিজা যে একজন উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় তরুণী ছিল, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’ ওই আইনজীবী আরও জানান, ‘খাদিজার এই করুণ পরিণতি হবে আমরা এটা জানতাম, তাকে ফেরানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা আমরা করেছি, কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা এই কিশোরীর জীবন বাঁচাতে পারলাম না।’ সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ