সবচেয়ে দীর্ঘজীবী মেরুদ-ী প্রাণীর সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পৃথিবীর সবেচেয়ে দীর্ঘজীবী মেরুদ-ী প্রাণীর খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গ্রিনল্যান্ড নামে হাঙ্গরের একটি প্রজাতি রয়েছে যা ৪০০ বছর বাঁচে। রেডিওকার্বন পরীক্ষা করে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন গবেষকরা। বিবিসি
গবেষকরা জানান, রেডিওকার্বন পরীক্ষার দ্বারা এই প্রজাতির ২৮টি হাঙ্গরের বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে। এই জাতীয় হাঙ্গর বছরে মাত্র ১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায়, এদের যৌন পরিপক্কতা আসে ১৫০ বছর বয়েসে।
গ্রিনল্যান্ড হাঙ্গরের উপর এই গবেষণা বিজ্ঞান বিষয়ক একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান লেখক, ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনের মেরিন বায়োলজিস্ট জুলিয়াস নেলসন বলেন, ‘আমরা সবাই ধারণা করেছিলাম যে, আমরা একটি দুর্লভ প্রজাতির প্রাণী নিয়ে গবেষণা করছি, কিন্তু এদের বয়স জেনে আমরা সত্যিই চমৎকৃত হয়েছি।’
গ্রিনল্যান্ড হাঙ্গর ৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে, ৪ মিটার লম্বা হওয়ার পর এদের শরীরে যৌন পরিপক্কতা আসে ও এরা পুনরুৎপাদনে সক্ষম হয়ে উঠে। উত্তর আটলান্টিকের গভীর শীতল সমুদ্রে এদের বাস। নেলসন জানান, গ্রিনল্যান্ড হাঙ্গরের শরীরে কোনো শক্ত অংশ না থাকায় এর বয়স বের করা যাবে না বলেই ভেবেছিলেন তারা। রেডিওকার্বন পরীক্ষাকে প্রাথমিক পদ্ধতি হিসেবে নেওয়া হলেও পরে আরও একটি পদ্ধতি বেছে নেন বিজ্ঞানীরা। গ্রিনল্যান্ড হাঙ্গরের চোখের লেন্সে এক ধরনের প্রোটিন থাকে যা দিনে দিনে জমে শক্ত হয়ে যায় এবং কখনোই শরীরের সঙ্গে মিশে যায় না। এই প্রোটিন বিশ্লেষণ করেই এদের বয়স সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়। এই পদ্ধতিতেই পাওয়া গিয়েছে ৫ মিটার লম্বা একটি স্ত্রী হাঙ্গর যা এই প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বয়সী। বিজ্ঞানীদের ধারণা, ১৫০১ থেকে ১৭৪৪ সালের মধ্যে কোনো এক সময়ে এই স্ত্রী হাঙ্গরটি জন্মেছিল।
নেলসন জানান, পুরো উত্তর আটলান্টিকে পুনরুৎপাদনে সক্ষম স্ত্রী গ্রিনল্যান্ড হাঙ্গরের সংখ্যা খুবই কম। নবজাতক বা শিশু হাঙ্গরও নেই বললেই চলে। যে হাঙ্গরগুলো পাওয়া যায় তাদের বেশিরভাগই কিশোর বয়সী এবং এদের প্রজননে সক্ষম হতে আরও ১০০ বছর সময় লেগে যাবে।
এর আগে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী যে মেরুদ-ী প্রাণীর খোঁজ পাওয়া যায় তার বয়স ছিল ২১১ বছর। তবে অমেরুদ-ী প্রাণীর সঙ্গে একত্রে বিবেচনা করলে এর চেয়ে বেশি বয়সী প্রাণীর সন্ধান পাওয়া যায় আর তা হলো ৫০৭ বছর বয়সী মিং। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ