সেল গঠন হলেও গ্রেফতার শূন্য পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ৮৭ ‘মানবতাবিরোধী’
এস এম নূর মোহাম্মদ : মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার পলাতক আসামির সংখ্যা বাড়ছেই। এ নিয়ে বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও বিচারপ্রার্থীরা। যদিও পলাতকদের গ্রেফতারের জন্য ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে তদারকি সেল গঠন করা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত একজন আসামিও গ্রেফতার করতে পারেননি তারা। সম্প্রতি আলোচিত জঙ্গি হামলার ঘটনায়ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত এবং তাদের স্বজনদের জড়িত থাকার কথা বলা হচ্ছে।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিচার শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত পলাতক রয়েছেন ৮৭ আসামি। এর মধ্যে দ- ঘোষণা হয়েছে ২৪ আসামির বিরুদ্ধে। বর্তমানে বিচার চলছে পলাতক ৪৫ আসামির। আর তদন্ত চলছে পলাতক ১৮ জনের বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে দ-িত ও যাদের বিচার চলছে, তাদের নাম জানা গেলেও তদন্তাধীন আসামিদের নাম প্রকাশ করেনি ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
এদিকে পলাতকদের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান এ প্রতিবেদককে বলেন, দুদক, মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের পরোয়ানা ছাড়াই আসামি গ্রেফতার করতে পারেন। কিন্তু আমাদের আইনে এ বিধান নেই। যার কারণে তদন্ত চলাকালীন তদন্ত সংস্থা আসামি গ্রেফতার করতে পারে না। তিনি বলেন, তদন্ত করে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পরই আমাদের আদালতের শরণাপন্ন হতে হয়। লিখিতভাবে ওয়ারেন্ট চাওয়ার পর আদালত তা মঞ্জুর করলেই কেবল গ্রেফতারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু তদন্ত চলাকালে বিষয়টি জানার পর কেউ কেউ পলাতক হয়ে যান। কেউ আবার পরিবারসহ পালিয়ে যান। যার কারণে আসামি গ্রেফতার করা অনেক সময় সম্ভব হয় না।
দ-প্রাপ্ত পলাতক আসামিরা হচ্ছেনÑ আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার, আশরাফুজ্জামান খান, চৌধুরী মঈনুদ্দিন, জাহিদ হোসেন খোকন, হাসান আলী, নাছির আহম্মেদ, গাজী মো. আব্দুল মান্নান, মো. হাফিজ উদ্দিন, আশরাফ হোসেন, মো. আব্দুল মান্নান এবং মো. আব্দুল বারী। এদের সবাইকেই মৃত্যুদ- দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এছাড়া ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বার, মো.আযহারুল ইসলাম, মুজিবুর রহমান ওরফে আঙ্গুর মিয়া, অধ্যাপক শরীফ আহমেদ, হারুন, ইব্রাহিম হোসেন, শেখ মোহাম্মদ মুজিবুর, মো.আব্দুল আজীজ সরদার, কাজী ওহিদুল ইসলাম, আ.আজিজ সরদার, আব্দুল খালেক মোড়ল, মশিয়ার রহমান এবং আবুল হাশেমকে আমৃত্যু কারাদ- দেওয়া হয়েছে ট্রাইব্যুনালের রায়ে।
এদিকে বিচারাধীন ৪৫ আসামির মধ্যে রয়েছেন- কক্সবাজারের মৌলভী জকরিয়া সিকদার, অলি আহমদ, জালাল উদ্দিন প্রকাশ, সাইফুল প্রকাশ সাবুল, মমতাজ আহম্মদ, হাবিবুর রহমান, আমজাদ আলী, আব্দুল মজিদ প্রকাশ আ. শুক্কুর, জাকারিয়া, মৌলভী জালাল, আব্দুল আজিজ ও মৌলভী রমিজ হাসান; গাইবান্ধার আবু সালেহ মো. আজিজ মিয়া, নাজমুল হুদা, রুহুল আমিন মঞ্জু, আব্দুল লতিফ, আবু মুছলিম মোহাম্মদ আলী ও আব্দুর রহিম মিয়া; মৌলভী বাজারের শামছুল হক, নেছার আলী, মোবারক মিয়া, আবদুন নূর তালুকদার, আনিস মিয়া ও আ. মুছাব্বির মিয়া; হবিগঞ্জের লিয়াকত আলী; নেত্রকোনার খালেক তালুকদার, কবির খান, নুর উদ্দিন রাদিন, সালাম বেগ ও শেখ মো. এ মজিদ; ময়মনসিংহের ওয়াজ উদ্দিন, খন্দকার গোলাম রব্বানী ও কাজী বদরুজ্জামান; জামালপুরের বেলায়েত হোসেন, নাসির উদ্দিন, মো.ফখরুজ্জামান ও ইসমাইল হোসেন; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সৈয়দ মো. হুসাইন; কিশোরগঞ্জের আমিনুল ইসলাম; শরিয়তপুরের ইদ্রিস আলী সরদার; সাভারের আবুল কালাম; ঢাকার আব্দুল কুদ্দুস ও জয়নাল আবেদীন। সম্পাদনা: এম আলম