রান্নার কাজে গ্যাসের ব্যবহার থাকবে না
হাসান আরিফ : রান্নার কাজে গ্যাসের ব্যবহার লিমিটেড মানে কি? মোটেই থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। তিনি বলেন, জনগণকে বোঝাতে হবে। ভাত-ডাল রান্নার কাজে গ্যাসের ব্যবহার পুরোপুরি অপচয়। আন্দোলন বা চিৎকার করে কোনো লাভ হবে না। গতকাল দুপুরে পেট্রোবাংলায় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবসের সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব নাজিমউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিপিসির চেয়ারম্যান মাহবুব রেজা খান, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আহমেদ বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন হাইড্রোকার্বন ইউনিটের মহাপরিচালক মো. হারুন-অর-রশিদ খান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে গৃহস্থালিতে গ্যাস ব্যবহার নিরুৎসাহিত করছে। বাসা-বাড়িতে পাইপলাইনের গ্যাস সংযোগ আর না দেওয়ার পাশাপাশি সিলিন্ডারে এলপিজি আমদানি উৎসাহিত করছে।
তিনি বলেন, আমরা ভেবেছিলাম, আমাদের দেশে প্রচুর গ্যাস রয়েছে। তাই গৃহস্থালিতে ব্যবহারের জন্য গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছিল। এখন আমরা যা দেখছি, আমাদের কাছে গ্যাস যা আছে, তা একেবারেই যৎসামান্য। এটা এত মূল্যবান যে, তা দিয়ে ভাত, ডাল রান্না করা একেবারেই অপচয়। এটা আমাদের নিজেদের বোঝা উচিৎ, অন্যদের বোঝানো উচিৎ যে, রান্না- বান্নায় গ্যাসের ব্যবহার চলবে না।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, এলএনজি আমদানি, খনিজ সম্পদ আহরণ, জ্বালানি বহুমুখীকরণ, নবায়ণযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, চিন্তাশীল নতুন প্রজম্ম প্রয়োজন। মন ও চিন্তাশীলতাকে সজীব রাখতে পারলে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, পরিবেশবান্ধব আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। ২০৪১ সালে আমাদের কোথায় কি ধরনের জ্বালানি লাগবে তা আমরা উৎস নিরূপন করেছি। সে অনুযায়ী পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। দক্ষ জনশক্তি ও চাহিদামতো অর্থ চ্যালেঞ্জ হলেও বড় কোনো বাধা নাই।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট শেল অয়েল-এর কাছ থেকে ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড স্ট্যালিং মূল্যে ৫টি গ্যাস ক্ষেত্র ( তিতাস, হবিগঞ্জ, রশিদপুর, বাখরাবাদ ও কৈলাশটিলা ) কেনা হয়। এ ৫টি গ্যাস ক্ষেত্র থেকে এখন মোট গ্যাস সরবরাহের ৩৪ শতাংশ জাতীয় গ্রীডে আসে। বাংলাদেশে উৎপাদিত গ্যাসের ১২ শতাংশ ব্যবহার হয় গৃহস্থালিতে রান্নার কাজে। গ্যাস সঙ্কটের কারণে ২০০৯ সাল থেকে গৃহস্থালিতে নতুন আর গ্যাস সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না বললেই চলে। বর্তমানে দেশে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে দুই হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের কিছু বেশি। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম