সরকারের সফলতার প্রশংসা করলেন অলি আহমদ সব দলের অংশগ্রহণে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি এলডিপির
শাহানুজ্জামান টিটু : সব ভেদাভেদ ভুলে সব দলের অংশগ্রহণে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি ড.কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম । তিনি বলেন, এর কোনো বিকল্প নাই। আশা করি, এ ব্যাপারে সরকার পদক্ষেপ নেবে। অন্যথায় দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং জনগণকে আস্থায় নেওয়া সম্ভব হবে না। সংকটও কাটবে না।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল সুন্দরবনে দেশের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমের মতবিনিময়কালে তিনি এ দাবি জানান। এসময় তিনি বর্তমান সরকারের কর্মকা-ের সমালোচনার পাশাপাশি ভালো ও উন্নয়নমূলক কর্মকা-েরও প্রশংসা করেন। এছাড়া দেশে চলমান সংকট নিরসনে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা দেন।
সরকারের সফলতার প্রশংসা : নিঃসন্দেহে সরকার অনেকগুলো ভালো পদক্ষেপও নিয়েছে, কাজও করেছে। যেমন- নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, বড় আকারে বাজেট প্রণয়ন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, প্রাইভেট ক্রেডিট বিগত চার বছরের চেয়ে বেশি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, দেশে সুশাসন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথে সব ধরনের বাধা দূর করতে হবে। দলীয়করণের মনোভাব ও প্রতিহিংসার রাজনীতি বর্জন, মানবাধিকার ও মানুষের কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, মিথ্যা প্রচার ও মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত থাকা। অর্থনৈতিক সংস্কার করতে হবে। জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের সব সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে।
২০ দলীয় জোটকে বাইরে রেখে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির যে প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাইলে অলি আহমদ জানান, যাদের সঙ্গে ঐক্যের ডাক দেওয়া হয়েছিল বা যে বৈঠক হয়েছিল, সেখানে তিনি উপস্থিত ছিলেন না। যারা আমাদের ২০ দলের বাইরে আছেন, তাদের সঙ্গে বিএনপির পক্ষ থেকে একাধিবার বৈঠক হয়েছে। বিভিন্ন অজুহাতে তারা ২০ দলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে অনীহা প্রকাশ করেছেন এবং তারা কয়েকটা দল নিয়ে ড. কামাল হোসেন সাহেবের সঙ্গে একটা জোটও করেছিল। সুতরাং যারা জোটে (২০ দলীয় জোট) আসতে অনীহা প্রকাশ করেছে তারা যে বৃহত্তর ঐক্য করবে, এটা আমি বিশ্বাস করি না। এ নিয়ে আমি সন্দিহান। কারণ অনেকে ধান্ধাবাজ, অনেকে দুর্নীতিবাজ, বিভিন্ন কলা-কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে।
চাঁদাবাজি, দখল, দুর্নীতির ব্যাপকতা তুলে ধরতে গিয়ে অলি আহমদ কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছিরের বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির ঘটনা উঠে আসার কথা বলেন। তিনি বলেন, কিছু দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহল জঙ্গিবাদ সৃষ্টির মাধ্যমে আমাদের শিল্প-কলকারখানা ধ্বংসের কাজে লিপ্ত রয়েছে। আবার কখনও কখনও তারা ত্রাণকর্তার ভূমিকায় আবির্ভূত হচ্ছে। জনগণ তাদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে ভুল করবে না বলে আমি বিশ্বাস করি।
প্রায় দুই লাখের বেশি বিদেশি নাগরিকের বাংলাদেশে অবৈধভাবে বসবাসের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে অলি আহমদ বলেন, এরা কারা, কিভাবে বসবাস করছে? তাদের শক্তি কোথায়? এদের মধ্যে হয়তো অনেকে জঙ্গিবাদে অর্থায়ন করছে। সরকার তাদের প্রতি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
পুলিশসহ আইশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকা-েরও সমালোচনা করেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আজকে এখানে আসার পর আমাকে বলা হলো, একজন পুলিশ অফিসারের সঙ্গে আলাপ করে নাকি আমাকে প্রেস কনফারেন্স করতে হবে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। আজ দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। পুলিশ অফিসারের অনুমতি নিয়ে প্রেস কনফারেন্স করতে হবে। তাহলে প্রধানমন্ত্রীর উচিত সামরিক শাসন জারি করে দেওয়া। তাহলে সব সমস্যার সমাধান হবে। সম্পাদনা : আ. হাকিম