১৬ অক্টোবর বিমসটেক আলোচনায় বসছেন শেখ হাসিনা ও মোদি জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় পারস্পরিক পদক্ষেপে যাবে বাংলাদেশ-ভারত
বিশ্বজিৎ দত্ত : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক যেকোনো সময়ের চেয়ে সবচেয়ে ভালো। ট্রানজিট, বিনিয়োগ,অবকাঠামো, ছিটমহল, বিদ্যুৎ থেকে বন্দি বিনিময় সব কিছুতেই বাংলাদেশ ও ভারত পরস্পর হাত ধরাধরি করে চলছে। দুই দেশের মধ্যে সংঘটিত প্রায় ২৮টি চুক্তি বাস্তবায়ন ও বাস্তবায়নের পথে রয়েছে।
গত কয়েক বছরে দুই প্রধানমন্ত্রীর যতবার দেখা ও কথা হয়েছে তাও বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। ক্রিকেট থেকে জন্মদিন সবকিছুতেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ সফরে এসে মোদি বলেছিলেন, পরেরবার বাংলা শিখব। কথাও রেখেছেন তিনি, পেট্রাপোল স্থল বন্দর উদ্বোধনে ভিডিও কনফারেন্সে বাংলাতে কথা বলেছেন।
তবুও দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে অনেক কথা রয়ে গেছে। এরমধ্যেই নতুন সমস্যা বৈশ্বিক পর্যায়ের সন্ত্রাসবাদ। যার ছায়া বাংলাদেশ ও ভারতেও পড়েছে। পুরনো সমস্যাও আছে। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এসব নিয়ে সরাসরি কথা হওয়া দরকার। আগামী ১৬ অক্টোবর ভারতের গোয়ায় মিলিত হচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই অনুষ্ঠিত হবে বিমসটেক (দ্য বে অব বেঙ্গল ইনেশিয়েটিভ ফর মারিট সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোপারেশন) সম্মেলন। মায়ানমার, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভুটান এই জোটের সদস্য। সেক্রেটারিয়াল অফিস বাংলাদেশে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বিমসটেকের অফিসটি উদ্বোধন করেছিলেন। শুধু নরেন্দ্র মোদিই নন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় সদস্য দেশগুলোর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করবেন। মায়ানমারের অং সাং সুচি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো দেখা হবে শেখ হাসিনার সঙ্গে। রোহিঙ্গা সমস্যা থেকে শুরু করে মায়ানমারের গ্যাস বাংলাদেশে আনার বিষয়টিও আলোচনায় থাকবে। নেপালের নতুন কমিউনিস্ট প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল প্রচন্দ। তার সঙ্গেও শেখ হাসিনার প্রথম সাক্ষাৎ। বাংলাদেশ নেপালের দুর্যোগে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ হাজার টন চাল ত্রাণ পাঠিয়েছেন নেপালে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী নেপালে চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে। বাংলাদেশের সৈয়দপুর বিমানবন্দর নেপাল কীভাবে ব্যবহার করতে পারে এ বিষয়টিও আলোচনায় থাকবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনোজ কুমার রায় জানান, আগের বিমসটেক সম্মেলনে থাইল্যান্ডের আপত্তির কারণে এই দেশগুলোর মধ্যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের বিষয়টি সুরাহা হয়নি। এবারে আলোচনা অনেক অগ্রসর হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে অঞ্চলিক পর্যায়ের জোটটি এই সম্মেলনে সক্রিয়তা রাখতে পারবে। তবে তিনি এও বলেন, বিমসটেকে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে শুধু বাণিজ্যসংক্রান্ত বিষয়গুলো দেখছি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এবারের আলোচনায় প্রাধান্য পাবে সন্ত্রাস দমন। আর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে চুক্তিগুলো হয়েছে তার ফলোআপ। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি