কবির প্রত্যাবর্তন রেজাউদ্দিন স্টালিন
খরদগ্ধ সাদাপৃষ্ঠা জুড়ে কবি চায় অঝোর শ্রাবণ
কবির প্রার্থনা প্রতিপালনের আগে
প্রয়োজন মেঘে মেঘে বজ্রবিদ্যুৎ
পোড়া মাটির কান্না আর কুমারীর দীর্ঘ ঝড়োশ্বাস
প্রকৃতির অনুগ্রহ ছাড়া এতো আয়োজন একা কবির পক্ষে কি করে সম্ভব
কবি তার কলমের সমস্ত রক্ত দিয়ে ঋণ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলে
কবির ক্ষমতা অসীমত্ব পায়
কবি তার বুকের ভেতর থেকে বেদনার পুঞ্জীভূত
মেঘ ঢেলে দিলো খাতার আকাশে
আর সহস্র বছরের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বিদ্যুৎ
বেঁধে দিলো মেঘের গ্রীবায়
বৃষ্টির সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে
কয়েক মুহূর্ত আগে সাদাপৃষ্ঠা জুড়ে অসম্ভব নিরবতা
যেন দেবতা এনফিল তার মেষগুলো নিয়ে
দ্রুত এ পথে যাবেন
কবির আজন্ম প্রার্থনা এই বিরল বৃষ্টির
কতযুগ বৃষ্টি চায় কবি
কবি কি প্রপাত চায় দানবীয় নূহের প্লাবন
তার কি নৌকা আছে যেখানে আশ্রয় নেবে
জোড়া-জোড়া শব্দ নরনারী
সর্বভূক উজ পর্যাপ্ত রুটি ও পানীয় না পেলে
কিভাবে যোগান দেবে নৌকার কাঠ
যদিওবা কষ্টে সৃষ্টে তৈরি হবে আশ্চর্য নৌকা
কিন্তু বিদ্রোহী কেনান যদি সেখানে না ওঠে
পুত্রপ্রেমে অন্ধ কবি তুলবে কি তৃষিত নোঙর
এখন বৃষ্টির ব্যাপক তোড়ে সাদাপৃষ্ঠাব্যাপী সমুদ্র লাফিয়ে উঠছে
ইউলিসিসের মতো কবির নৌকা দুলছে ঢেউয়ে ঢেউয়ে
পথে কি থামবেন তিনি অজানা স্থানে
সেখানে কুহাকিনী সার্সী যদি হঠাৎ বানিয়ে দেয় ভেড়া বা শুকর
দানব সেলার আক্রমণ পথে পথে
সে যদি চিবিয়ে খায় সঙ্গী সাথীদের
আরো আছে ভয়ঙ্কর পদ্মভূক দ্বীপ
বিশ্রামের সময় কোথায়
কবিকে নামতে হবে
সাদাপৃষ্ঠা জমিনে আবার
যদি নিষ্ঠুর ক্যারাবিয়ান শুষে নেয় অথৈ সাত সমুদ্রের জল
তবু নির্ভীক থাকতে হবে তাকে
ফিরে পেতে হবে বৃষ্টির ব্যাপ্ত স্রোতধারা
ফিরতে হবে নিঃসঙ্গ একাকী
সাদাপৃষ্ঠার বুকে ছোট্ট স্বদেশভূমি ক্ষুব্ধ ইথাকায়
যেখানে দিনরাত কাফন সেলাই করে ভগ্নি পেনোলপি।
পরিচিতি : কবি